মণিপুরের ৯ বাসিন্দার দেহ ময়না তদন্তের পর পরিজনদের হাতে দেওয়া হলো আসামের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
রয়েছে জিরিবামে নিহত ৩ শিশু ও ৩ মহিলার দেহও। কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাহারায় দেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছে বাসস্থান মণিপুরের জিরিবামে।
মুখ্যমন্ত্রী কবে পাহাড়ের জেলায় সড়কপথে যাবেন? কবেই বা আদিবাসী বিষয়ক মন্ত্রী উপত্যকায় যাবেন সড়কপথে? কেন মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে যেতে পারেন না? কেনই বা আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী পাহাড় থেকে উপত্যকায় যেতে পারেন না?
বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাকে উদ্দেশ্য করে ঝাঁকে ঝাঁকে এমনই প্রশ্ন তুললেন মণিপুরে কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি কে মেঘচন্দ্র।
মন্ত্রী, বিধায়কদের বাড়িতে হামলার জন্য রাজনৈতিক বিরোধীদের দায়ী করেছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।
৭ নভেম্বরের পর থেকে নতুন করে জ্বলছে মণিপুর। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে নেই। শুক্রবার আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর আরও ১০ হাজার ৮০০ জওয়ান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
৭ নভেম্বর তিন সন্তানের এক জননীকে চাষের খেতে হত্যা করা হয় জিরিবাম জেলায়। মেইতেই জনজাতির সশস্ত্র গোষ্ঠী নাশকতার পিছনে বলে সন্দেহ করে কুকি জনজাতি। তার পালটা কুকি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা জিরিবামে বোরোবেকরায় হামলা চালায় ১১ নভেম্বর। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের ১০ সদস্য নিহত হলেও বাকিরা অপহরণ করে তিন মহিলা এবং তিন শিশুকে। পরে এই শিশু ও মহিলাদের দেহ পাওয়া যায় নদীতে। বিক্ষোভ পালটা বিক্ষোভে মণিপুর কার্যত প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
মণিপুরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলেন কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তার পালটা খাড়গেকে চিঠি দেন বিজেপি’র জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। শুক্রবারই নাড্ডাকে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ।
রমেশ বলেছেন, ‘‘বিজেপি সভাপতির চিঠিতে চারটি বিষয় স্পষ্ট- অস্বীকার, বিকৃতি, নজর ঘোরানো এবং সম্মানহানির চেষ্টা।’’
তিনি বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি প্রশ্ন হলো প্রধানমন্ত্রী ঠিক কবে মণিপুর যাচ্ছেন? সংখ্যাগুরু বিধায়ক সঙ্গে না থাকা সত্ত্বেও আর কতদিন এই মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের ক্ষতি করতে দেওয়া হবে? রাজ্যে আর কবে একজন পূর্ণ সময়ের রাজ্যপাল নিযুক্ত করা হবে? কবে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মণিপুরে চূড়ান্ত ব্যর্থতার দায় নেবেন?’’
নাড্ডার অভিযোগ, অতীতে কংগ্রেসের শাসনে রাজ্যে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তার ফল ভুগতে হচ্ছে আজ। এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন মেঘচন্দ্রও।
মেঘচন্দ্র বলেছেন, ‘‘মণিপুরে এখনই শান্তি এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। তার বদলে অসত্য অভিযোগ করে চলেছেন বিজেপি সভাপতি।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘অতীতে ২০০১-এ কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসীন থাকার সময় মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন, বিধানসভা ভবনে আগুন ধরানো হয়েছিল। আজ আবার ‘ডবল ইঞ্জিন সরকারের’ সময়ে, যখন কেন্দ্র এবং রাজ্যে বিজেপি, ফের দেখা যাচ্ছে আইনের শাসন বলে আর কিছু নেই।’’
মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেইতেইদের পক্ষ নিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে কুকি-জো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বিরোধ বাঁধানোর অভিযোগ রয়েছে বিজেপি এবং আরএসএস’র বরুদ্ধে। পাহাড়ি অঞ্চলে খনির জন্য আদিবাসীদের উচ্ছেদের পরিস্থিতিতেও আতঙ্কের পরিবেশ ছিল। কিন্তু মেইতেইদের আদিবাসী সংরক্ষণের আওতায় আনা সংক্রান্ত বিচারবিভাগীয় নির্দেশ প্রথম দফায় আগুন ছড়িয়ে দেয়। গত বছরের মে থেকে চলছে সশস্ত্র সংঘাত।
Manipur Congress
মণিপুরের ৯ বাসিন্দার দেহ পরিজনদের, বিজেপি-কে আক্রমণ কংগ্রেসের
×
Comments :0