আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসকের ধর্ষণ খুনের বিচারে দায়িত্ব পালনের দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী! মঙ্গলবার বিধানসভায় তাঁর দাবি, নির্যাতিতার বাড়িও গিয়েছেন। ফলে দায়িত্ব পালন করেছেন। তদন্তের ভার সিবিআই’র কাছে চলে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে তাঁর আর কিছু করার নেই।
কেবল রাজ্যে নয়, দেশের সর্বত্র এমনকি বিদেশেও ধিক্কারের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন প্রশাসনই। ক্ষোভের মুখে কলকাতা পুলিশ। সাক্ষ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ গোড়া থেকেই তুলছিলেন বামপন্থীরা। পরে সুপ্রিম কোর্টে অপরাধের অকুস্থল বদলের তথ্য দেয় সিবিআই-ও। কলকাতা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে এমন মারাত্মক ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা।
তারপরও বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘কোনও দায়িত্ব পালন করিনি বলতে পারবেন না। ১২ আগস্ট নির্যাতিতার বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ এরপর ফের তিনি বলেছেন যে পুলিশের তদন্তের জন্য পাঁচদিন সময় চেয়েছিলেন। তার আগেই সিবিআই’র তদন্তের আবেদন জানায় পরিবার।
নির্যাতিতার বাবা-মা যদিও আগেই স্পষ্ট করেছেন যে পুলিশের তদন্তে ভরসা থাকছিল না। বিচারের আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।
এদিন রাজ্যের তৃণমূল সরকার ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের লক্ষ্য জানিয়ে ‘অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল‘ পেশ করে। এই বিলে ফৌজদারি আইনে সংশোধনের লক্ষ্য জানানো হয়েছে। বিভিন্ন স্তর থেকেই তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে যে কেবল আইনের অভাব নারী নির্যাতন হচ্ছে এমন নয়। চালু আইনের প্রয়োগে প্রশাসনিক স্তরে সদিচ্ছার অভাবও বড় কারণ।
আর আর জি কর হাসপাতালে দেহ পাওয়ার পরও জায়গা ঘিরে রাখা, পাশের দেওয়াল ভাঙা, জোর করে দ্রুত দেহ দাহ করা, অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদও না করার মতো একের পর এক অভিযোগ পুলিশ এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন অংশই মনে করছেন, রাজ্যময় বিক্ষোভের মুখে পড়ে বিল পেশ করা হয়েছে ক্ষোভ থেকে পরিত্রাণের কৌশল খুঁজতে।
মমতা এদিন বিলের বিতর্কে অংশ নিয়ে উত্তর প্রদেশের হাথরস, উন্নাওয়ের উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তোলেন। মমতা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী জাতীয় লজ্জা।’’
উল্লেখ্য, ৯ আগস্ট সকালে আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার রুমে মেলে চিকিৎসকের দেহ। ১৩ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশের পরই দ্রুততার সঙ্গে সেমিনার রুমের পাশের দেওয়াল ভাঙা হয়। এর মধ্যেই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় যে ঘটনার দিন সকাল থেকে সেমিনার রুমে বহু লোক। এধের বেশ কয়েকজনের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসকদের মঞ্চ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স।
এদিন বিধানসভায় মমতার আক্রমণের লক্ষ্য ছিল সিপিআই(এম)। চলতে থাকা প্রতিবাদের জন্য সিপিআই(এম)-কে দায়ী করেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘বিজেপি’র সঙ্গে কমপিটিশনে নেমে ‘সিপিএম‘ আমার বিরুদ্ধে বলছে।’’
Comments :0