26 November India

দেশজুড়ে জনস্রোত: বিভাজনের রাজনীতিকে কড়া হুঁশিয়ারি শ্রমজীবীর

জাতীয়

পাটনায় জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বক্তব্য রাখছেন কৃষকসভার সাধারণ সম্পাদক বিজু কৃষ্ণান।

রাজস্থানের সিকর থেকে হিমাচল প্রদেশের কুলু। পাঞ্জাবের সাংগ্রুর থেকে তামিলনাডুর কাল্লাকুরিচি। ছবি সর্বত্র এক। জোট গড়ে রাস্তায় শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুর। স্লোগান জীবিকার। স্লোগান কাজের সুরক্ষার। স্লোগান মজুরির, ফসলের ন্যায্য দামের। স্লোগান একশো দিনের কাজে দিন বাড়ানোর, মজুরি দিনে ৬০০ টাকা করার।


উত্তর প্রদেশের এটাওয়ায় বিক্ষোভ মিছিল। 

এভাবেই জীবনের দাবিতে বিভাজনের বাহিনীকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন শ্রমজীবীরা। প্রতিবাদের উত্তাপে নভেম্বরের শেষে তপ্ত থাকল আমজনতার ভারত, মেহনতীর ভারত। 
বাংলার প্রতিটি জেলাতেও একই মেজাজে পথে নামলেন শ্রমজীবী। আবাস দুর্নীতি থেকে ট্যাব, নদী ভাঙন থেকে ফসল নষ্টের ক্ষতিপূরণের মতো প্রতিদিনের দাবিতে কাঠগড়ায় দাঁড় করালো বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শক্তিকেই। প্রায় সব জেলায় দাবি উঠেছে পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে দেওয়া জমির পাট্টা আর বর্গার রেকর্ড নয়ছয় করা চলবে না। কৃষকের জমি হাতানোর ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।  
সংযুক্ত কিসান মোর্চা, কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ ও সারা ভারত খেতমজুর সংগঠনের ডাকে ২৬ নভেম্বর দেশের সমস্ত প্রান্তে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। সমস্ত ঠিকা শ্রমিকদের স্থায়ী করতে হবে, সকলের কাজ সুনিশ্চিত করতে হবে, সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে, সকল স্কিম কর্মীদের নিয়মিত করতে হবে- এমন দাবি শোনা গিয়েছে দেশের সর্বত্র। 


দিল্লি লাগোয়া নয়ডায় কৃষকনেতা হান্নান মোল্লা। সোমবারই হয় এই সমাবেশ। 

'শ্রমিক-কৃষক যৌথ প্রতিবাদ' এই নামে ঝাড়খন্ডের রাঁচিতে জেলা শাসকের অফিস অভিযান করা হয়। রাজস্থানের সিকরে মিছিল করে সংযুক্ত কিষান মোর্চা ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ মিছিল করে। পাঞ্জাবে সাংগ্রুরেও শ্রমিক-কৃষক যৌথ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সাংরুর জেলা শাসকের অফিসের বাইরে সমাবেশ করেন কৃষক-শ্রমিক-খেতমজুররা। তামিলনাড়ুর কাল্লাকুরিচি জেলা শাসকের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখান সংযুক্ত কিষান মোর্চা ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের কর্মীরা। বিহারের পাটনাতে 'শ্রমিক-কৃষক যৌথ প্রতিবাদ' কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সারা ভারত কিসান সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিজু কৃষ্ণান। 
হিমাচল প্রদেশের কুলুতেও এই কর্মসূচি পালিত হয়। অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়ওয়াড়া, তিরুপতিতে শ্রমিক-কৃষক যৌথ প্রতিবাদ হয়। নির্দিষ্ট জেলার জেলা শাসকের অফিসের বাইরে সমাবেশ করেন কৃষক-শ্রমিকরা। নয়ডা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অফিসের বাইরে ২৫ নভেম্বরই সমাবেশ করেন কৃষকরা। অধিগৃহীত জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে তাঁরা এখানে সমবেত হন। উত্তর প্রদেশের ২০০ গ্রামের কৃষকরা এই সমাবেশে যোগদান করেন। এই সমাবেশের নাম দেন 'মহাপঞ্চায়েত'। মন্দির-মসজিদ উস্কানিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছে মহাপঞ্চায়েত। 
এদিন নয়ডায় কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সারা ভারত কিসান সভার সর্বভারতীয় সহ সভাপতি হান্নান মোল্লা ও সর্বভারতীয় কৃষক নেতা পুষ্পেন্দ্র ত্যাগী। 


পাঞ্জাবের সাংগ্রুরে জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ।

দেশের সরকারে আসীন বিজেপি। প্রতিদিন ধর্মের নামে বিভাজনের জিগির চলছে। আর আমজনতার রোজগার, মজুরি, আয়ের সর্বনাশ। এই নীতি বদলের ডাকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ডাক দিয়েছেন হান্নান মোল্লা।

Comments :0

Login to leave a comment