DHAKA BLAST

ঢাকায় মৃত্যু বেড়ে ২০, জমা
গ্যাস থেকে বিস্ফোরণের অনুমান

আন্তর্জাতিক

DHAKA BLAST ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর পুরানো ঢাকার সিদ্দিক বাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাফে কুইন ভবনে আরও তিন জনের মরদেহ পেয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। বিস্ফোরণে বুধবার পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৭ জনের মরদেহ পরিবারের সদস্যরা পেয়েছেন।

মঙ্গলবার বিকালে নর্থ সাউথ রোডের ১৮০/১ হোল্ডিংয়ের সাত তলা ওই ভবনে বিকট বিস্ফোরণ হয়। ভবনে থাকা বিভিন্ন দোকানের কর্মচারীদের পাশাপাশি সামনের রাস্তায় থাকা যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীরাও হতাহত হন। ওই বিস্ফোরণের পর রাতে মোট ১৭ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। স্বজনরা মোট তিনজনের নিখোঁজ থাকার কথা জানিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনকে। 

বিস্ফোরণে আহত মোট ৬৫ জনকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা করা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১ জন এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ১০ জন ভর্তি রয়েছেন। যাঁরা দগ্ধ হয়েছেন, তাদের অবস্থাও ভালো নয়।

সিদ্দিক বাজারের কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে কীভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটি এখনো খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল ভবনটি পরিদর্শন করে বলেছে, ভবনের বেসমেন্টে বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। তবে ভবনের ধ্বংসস্তূপ, আহত ও নিহতদের আঘাতের ধরন দেখে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলটি মনে করছে বোমা কারণ নয়। অনুমান, ভবনের বেসমেন্টের বদ্ধ কোনো কক্ষে গ্যাস জমে সেটি গ্যাস চেম্বারেপরিণত হয়েছিল। সেখানে যেকোনো উপায়ে আগুনের স্ফুলিঙ্গ গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটেছে। 

এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য পাঁচটি উপায়ে গ্যাস জমতে পারে বলে মনে করছে তারা। ভবনের মাটির নিচে জলের ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস বেরতে পারে। দু’টি ভবনের মাঝখানে একটি সেপটিক ট্যাঙ্ক ছিল। সেখান থেকেও বেরতে পারে গ্যাস। বিচ্ছিন্ন কোনও গ্যাসের লাইন থেকেও গ্যাস জমতে পারে। আবার দেওয়ালে মিথেন গ্যাস জমে থাকতে পারে। বর্জ্য নিষ্কাশন পাইপে লিকেজ হয়েও গ্যাস জমতে পারে। বিশেষজ্ঞরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ভবনে থাকা বড় জেনারেটর থেকে বেরনো গ্যাস জমার সম্ভাবনাও।

সিটিটিসির বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) রহমত উল্লাহ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘যে কোনো উপায়েই হোক ভবনের আবদ্ধ কক্ষে গ্যাস জমেছিল। সেখানে বৈদ্যুতিক শট সার্কিট বা অন্য কোনো উপায়ে স্পার্ক থেকে ভবনে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে।’’ 

এ বিস্ফোরণ কোনো নাশকতা নয় বলেও প্রাথমিকভাবে মতামত দিয়েছেন এডিসি রহমত উল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, কোনো বিস্ফোরক বা আইইডি (ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) সার্কিট মেলেনি। বিস্ফোরক ব্যবহার হলে ধোঁয়া রঙিন বা কালো ধোঁয়া হয়। কিন্তু সেখানে তা ছিল না। দগ্ধ ব্যক্তিদের আহত হওয়ার ধরন দেখে বিশেষজ্ঞদের মনে হয়েছে, গ্যাসের স্তরটি তিন থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতায় ছিল। সম্ভবত বিস্ফোরণ মিথেন গ্যাস থেকে।

মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। ভবনের দুই পাশে আরও দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

Comments :0

Login to leave a comment