Supreme Court

উত্তর প্রদেশে ‘বুলডোজার’ আগ্রাসনকে সতর্ক করল সুপ্রিম কোর্ট

জাতীয়

‘স্বেচ্ছাচারী’ বুলডোজারের কড়া সমালোচনা করে বুধবার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, শাসন বিভাগ বিচার বিভাগকে অগ্রাহ্য করতে পারে না এবং অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হওয়ার কারণে জনগণের বাড়িঘর ভেঙে ফেলতে পারে না। বাড়ি ভাঙার জন্য কড়া নির্দেশিকা জারি করে শীর্ষ আদালত ‘শাসন বিভাগের বাড়াবাড়ির’ বিরুদ্ধেও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, দোষী আধিকারিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সংশোধনমূলক ব্যবস্থা হিসাবে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ‘‘বুলডোজার’’ পদক্ষেপে লাগাম লাগানোর জন্য শীর্ষ আদালত আবেদনগুলির শুনানি করছিল।
শুনানি চলাকালীন, আদালত জোর দেয় যে শাসন বিভাগ বিচারের ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে না। আদালত উল্লেখ করে যে কেবলমাত্র অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও নাগরিকের বাড়ি নির্বিচারে ধ্বংস করা সাংবিধানিক আইন এবং ক্ষমতার পৃথকীকরণের নীতি লঙ্ঘন করে।
‘‘সুষ্ঠু বিচার ছাড়া কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না,’’ আদালত বলেছে, অভিযুক্ত বা এমনকি দোষী সাব্যস্ত হওয়া সহ সকলের জন্য উপলব্ধ সুরক্ষা লাগু করতে হবে।
আদালত সতর্ক করে বলেছে, এ ধরনের মামলায় শাসন বিভাগের বাড়াবাড়ি মৌলিক আইনি নীতিকে ব্যাহত করে।
আদালত তুলে ধরেছে যে কর্মকর্তারা যখন তাদের কর্তৃত্বের বাইরে কাজ করেন তখন তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এ ধরনের স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে বিচার বিভাগীয় আদেশের অনুপস্থিতিতে, আইনের শাসনকে ক্ষুণ্ন করে।
স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ বা অবহেলার কারণে যদি অভিযুক্তদের অধিকার লঙ্ঘন করা হয়, আদালত পরামর্শ দেয় যে ক্ষতিপূরণ এই জাতীয় মামলাগুলির সমাধান করার একটি উপায় হতে পারে।
আদালতের প্রশ্ন, ‘‘যদি একজনেরও বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ আনা হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষ কীভাবে পুরো পরিবার বা কয়েকটি পরিবারের মাথা থেকে আশ্রয় সরিয়ে নিতে পারে?’’
‘‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে কাজ করলে কর্মকর্তাদের রেহাই দেওয়া যাবে না,’’ আদালত বলেছে, কর্তৃত্বের অপব্যবহার রোধে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে।

বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেছে।
এর আগে আদালত তার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাড়ি ভাঙার অভিযান বন্ধ রাখতে বলে।
আদালত নির্দেশ দিয়েছে, কোনও বাড়ি ভাঙার আগে ১৫ দিনের নোটিস দিতে হবে। কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করতে হবে এবং নোটিশগুলি ট্র্যাক করার জন্য তিন মাসের মধ্যে একটি ডিজিটাল পোর্টাল স্থাপন করতে হবে।

রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন সিপিআই(এম) নেত্রী বৃন্দা কারাট। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে স্বাগত জানাই। বুলডোজার আগ্রাসনকে অনৈতিক এবং অমানবিক বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই নির্দেশ আরও আগে এলে ভাল হতো। তাহলে আরও অনেক বাড়িঘর রক্ষা পেতে পারত বিজেপি শাসিত রজ্যগুলিতে। যাইহোক, এই রায় আগামীদিনে বিজেপি শাসিত রাজ্যে গরিব এবং সংখ্যালঘু মানুষকে টার্গেট করে আক্রমণ করা থেকে অনেকটাই সুরক্ষা দেবে’’।

Comments :0

Login to leave a comment