রামায়ণের প্যারোডি করায় আট পড়ুয়াকে আর্থিক জরিমানার শাস্তি দিল আইআইটি বোম্বে। গত ৩১ মার্চ ওই আট পড়ুয়া প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে ‘রাহোভান’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেন যাকে রামায়ণের প্যারোডি বলে মনে করছেন অনেকে। সেই অনুষ্ঠানের পর ওই নাটকের বিরোধিতা করে কয়েকজন পড়ুয়া কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান। তাদের অভিযোগ এর মাধ্যমে হিন্দু ধর্মের বিশ্বাসের ওপর আঘাত আনা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৮ মে বৈঠক করে আইআইটির শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি। তারপর ৪ জুন জানানো হয় যে আট জনের মধ্যে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকার জরিমানা দিতে হবে। বাকি চারজনকে দিতে হবে ৪০ হাজার টাকার জরিমানা। এছাড়া সিনিয়র পড়ুয়াদের জিমখানা পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং জুনিয়ারদের হোস্টেল পরিসেবা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ অর্থাৎ ২০ জুন এই জরিমানা জমা করতে হবে পড়ুয়াদের। আইআইটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যদি তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরিমানা না দেয় তবে টাকার অঙ্ক আরও বাড়বে।
আইআইটি বি ফর ভারত' নামে একটি গ্রুপ ৮ এপ্রিল নাটকটিকে রাম এবং রামায়ণের উপহাস হিসাবে চিহ্নিত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে। তাদের দাবি পড়ুয়ারা সম্মানিত ব্যক্তিদের উপহাস করার জন্য শিক্ষাক্ষেত্রের স্বাধীনতার অপব্যবহার করেছে।
সামাজিকমাধ্যমে যে ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে যে ওই নাটকে একজন পড়ুয়া তার অপহরণকারীর প্রশংসা করছে এবং যেখানে তাকে রাখা হয়েছে সেই জায়গারও প্রশংসা করছেন। আইআইটি বি ফর ভারতের দাবি যেই চরিত্র এই সংলাপ বলছে সে নাকি সীতার চরিত্রে অভিনয় করছে। উল্লেখ্য আইআইটি বোম্বের পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের প্রশংসাও করেছে এই গ্রুপ।
তবে আইআইটির এই পদক্ষেপের সমালোচনাও করেছেন অনেকে। এক ব্যাক্তি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন যে, শিক্ষাক্ষেত্রকে মত প্রকাশের নিরাপদ জায়গা বলে মনে করা হতো। কিন্তু এই ঘটনার পর সেই ধারণা বদলে যাচ্ছে।
শিক্ষাক্ষেত্রে একজন পড়ুয়ার মানসিক বিকাশ হয়। তার মধ্যে থাকা বিভিন্ন প্রতিভা সেখানে প্রকাশ পায়। নাটক, বিতর্ক সভার মাধ্যমে তারা তাদের মত প্রকাশের সুযোগ পায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে যে ভাবে শিক্ষাক্ষেত্রের অভ্যন্তরে পড়ুয়াদের স্বাধীনতাকে হত্যা করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Comments :0