Recruitment Scam

নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে জামিন পেলেন অর্পিতা

রাজ্য

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে মানিক ভট্টাচার্যের পর জামিন পেলেন পার্থ চ্যাটার্জির ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখার্জি। সোমবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ইডি’র বিশেষ আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। আদালত ৫লক্ষ টাকা বক্তিগত বন্ডে এই জামিন মঞ্জুর করে বলেছে, অর্পিতা মুখার্জি কলকাতা পুলিশের এলাকার বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না। তাঁর পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। প্রায় আড়াই বছর জেলে থাকার পর ছাড়া পেলেন অর্পিতা।

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ২০২২ সালের ২৩ জুলাই গ্রেপ্তার হন রাজ্যের দাপুটে মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি ও তাঁর বান্ধবী । রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি ঘনিষ্ঠ অর্পিতার বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। তাঁর একাধিক বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। টালিগঞ্জের বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে ইডি উদ্ধার করেছিল ২১ কোটি ২৪ লক্ষ নগদ টাকা। সঙ্গেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণে গয়না। সেই টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাঙ্ক ভর্তি ট্রাক নিয়ে আসা হয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক থেকে। উদ্ধার হওয়া টাকা ট্রাঙ্কে বোঝাই করে তোলা হয় ট্রাকে। ট্রাঙ্কগুলিতে নির্দিষ্ট নম্বর দেওয়া ছিল। ৫০০ এবং দু’হাজার টাকার নোটের জন্য আলাদা আলাদা ট্রাঙ্ক। ৫৪ লক্ষ টাকার বিদেশি মুদ্রাও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শুধু তাই নয়, অর্পিতা মুখার্জির ওই ফ্ল্যাট থেকে শিক্ষা দপ্তরের নির্দিষ্ট লোগো থাকা খাম উদ্ধার হয়েছে, তাতেও ছিল নগদ বিপুল পরিমাণ টাকা। এমনকি পার্থ চ্যাটার্জির নাম লেখা টাকার এনভেলপও উদ্ধার হয় অর্পিতা মুখার্জির ঘর থেকে। একাধিক জমির কাগজপত্রও মেলে। সকাল থেকে আটক দেখানোর পরে বিকালে গ্রেপ্তার করা হয় পার্থ চ্যাটার্জির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখার্জিকে। পরে তাঁর বেলঘরিয়ার বাড়ি থেকেও প্রায় ২৮ কোটি টাকা, বিপুল গয়না উদ্ধার হয়। তখন থেকেই জেলবন্দি ছিলেন তিনি। যদিও অর্পিতা আদালতে একাধিকরা দাবি করেছেন, ওই টাকা তাঁর নয়। 
রাজ্যে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত বেনজির দুর্নীতি। এসএসসি’র গ্রুপ-সি পদে বেলাগাম দুর্নীতি, নিয়োগ পিছু বড় অঙ্কের টাকা খেলা হয়েছিল। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তেই এর আগে সামনে এসেছিল পার্থ চ্যাটার্জি ও অর্পিতা মুখার্জির পার্টনারশিপ ফার্মের তথ্য। ২০১২সালেই প্রথম টেট দুর্নীতির সময়তেই পার্থ চ্যাটার্জি ও তাঁর বান্ধবী মিলে এই সংস্থা খুলে ফেলে। ‘এপিএ ইউটিলিটি সার্ভিসেস’ নামক সেই ‘পার্টনারশিপ কোম্পানি’তে পার্টনার মাত্র দু’জনেই। সংস্থায় পার্থ চ্যাটার্জি ও অর্পিতা মুখার্জির ৫০ শতাংশ করে শেয়ার রয়েছে। আর এই সংস্থাতেই ঢুকেছিল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল পরিমাণ টাকা।  সেই সূত্রেই তদন্তে একাধিক ভুয়ো অথবা শিখণ্ডী সংস্থার হদিশ পায় ইডি। অর্পিতা মুখার্জির নামে চারটি সংস্থার হদিশ মিলেছিল তদন্তের একেবারে প্রথম পর্বে। দেখা গেছে ওই চারটি সংস্থাই আসলে কাগজে কলমে। আসলে কালো টাকা সাদা করার কৌশলেই ব্যবহার করা হতো ঐসব সংস্থার অ্যাকাউন্টগুলি। ইডি’র তরফে জানানো হয়েছিল পার্থ চ্যাটার্জি ও অর্পিতা মুখার্জির যোগসূত্রের মাধ্যমে প্রায় ২০১টি শিখণ্ডী বা শেল কোম্পানির হদিশ মিলেছে। 
সোমাবর পাঁচ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে অর্পিতাকে জামিন দিল ইডি’র বিশেষ আদালত। তাকে পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। 

Comments :0

Login to leave a comment