সঞ্জিত দে- ধূপগুড়ি
ময়নাগুড়ি থেকে রওনা হলো ‘ইনসাফ যাত্রা’। রবিবারই জলপাইগুড়ি শহরে পৌঁছাবেন ডিওয়াইএফআই নেতৃবৃন্দ। ডিওয়াইএফআই’র ইনসাফ যাত্রায় যে যুবক যুবতীরা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে শামিল হয়েছেন। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম থেকে একেবারে কোচবিহারের সীমান্ত এলাকার যুবক, যুবতীরা পদযাত্রায়। ন্যূনতম মজুরির দাবি, জমির অধিকারের দাবি, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা দাবি ইনসাফ যাত্রায় উচ্চারিত হচ্ছে। চা-বাগান থেকে গ্রামে সভা করেছেন বানারহাট, ময়নাগুড়িতে।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার জয়নগরের বিদ্যুৎ নস্কর যখন ২০০৩ সালে ক্লাস টুয়েলভে পড়তেন তখন চোখের সামনে বাবাকে এসইউসিআই ঘাতক বাহিনীর কাছে খুন হতে দেখেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন, ইনসাফ যাত্রা’র পদযাত্রী হিসেবে ইনসাফ চাইছেন।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শিল্পাঞ্চল থেকে আসা স্নিগ্ধা নায়ক বললেন, কিভাবে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি’র সাথে যোগসাজস করে শিল্পাঞ্চলে দাঙ্গা বাঁধাতে তৎপর হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির অন্তরা দত্ত ডিওয়াইএফআই’র কাজ করতে গিয়ে তিনমাসের ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে তিনমাস ঘরছাড়া হয়েও লড়াইয়ে র ময়দান থেকে সরে আসেননি।
আলিপুরদুয়ার জেলার জটেশ্বরের অকুতোভয় দীপক বর্মন চোয়াল শক্ত করে বলে উঠেন, ‘‘এই লড়াই, এই পদযাত্রা পশ্চিমবঙ্গের লাখো লাখো বেকার যুবদের কাজ পাওয়ার অধিকার আদায়ের লড়াই।’’ সুদূর কাকদ্বীপের শান্তনু দাস পরিযায়ী শ্রমিক। বছরের বেশিরভাগ সময়ই কর্মহীন থাকেন। চূড়ান্ত দারিদ্র্য, অভাব, অনটনের মধ্যে ও হাটছেন। বর্ধমান আদালতের পেশাজীবী সূর্যেন্দু বসু তৃণমূলীদের সন্ত্রাসের কারণে ছয় মাস নিজের বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। তিনি জানালেন, " বামপন্থী মতাদর্শ গত টান থেকেই অংশগ্রহণ করেছেন পদযাত্রায়। রাজ্যজুড়ে বিকল্পের কথা, প্রতি রোধের কথা বলবার জন্যই তো পথচলা। "
উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার জেলার যুবক-যুবতীদের সঙ্গে মেদিনীপুর, বর্ধমান, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, কলকাতা, বাঁকুড়া সব জেলা মিলেমিশে একাকার। গোটা রাজ্যজুড়ে বিকল্প মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ক্ষেত্রে ইনসাফ যাত্রা এক জীবন্ত সম্মিলিত প্রতিবাদের যাত্রা হয়ে উঠছে।
Comments :0