সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্যের কলেজে কলেজে ভর্তির ফর্ম অনলাইনে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। রাজ্যে এবারই প্রথম কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত অনলাইন ব্যবস্থায় ভর্তির প্রক্রিয়া চালু হবে। কিন্তু বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে না রেখে একটিই পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি কেন, এই প্রশ্ন তুলছে এসএফআই সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।
শনিবার দীনেশ মজুমদার ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসএফআই, পিএসইউ, এআইএসএফ এবং এআইএফবি’র নেতৃবৃন্দ। সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রণয় কার্য্যী, রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে সহ সংগঠনগুলির রাজ্য নেতৃবৃন্দ।
দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এবার একটিই পোর্টাল খোলা হয়েছে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার খর্ব হচ্ছে। এসএফআই বার বার দাবি করে এসেছে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তির ব্যবস্থা করুক।’’
এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাজ্যের প্রতিটি কলেজের বাইরে সংগঠনের পক্ষ থেকে হেল্পডেস্ক খোলা হবে। পড়ুয়ারা যাতে কোন সমস্যার মুখে না পড়ে তার জন্য এই হেল্পডেস্ক। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরনোর দীর্ঘ সময় পর শুরু হচ্ছে কলেজে ভর্তি।
ছাত্র নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি হলে স্বচ্ছতা বেশি থাকত। উল্লেখ্য, এর আগে রাজ্যে বিভিন্ন কলেজের নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তি নেওয়া হতো। প্রতিবার ছাত্রভর্তির সময় নানা অভিযোগ উঠেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন নানা কারসাজি চালাচ্ছে বলে সরব হয়েছে বিভিন্ন অংশ। টাকা নিয়ে ভর্তির নানা ঘটনা বারবার সামনেও এসেছে। এই ব্যবস্থা বদলাতেই বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ভর্তির দাবিতে সরব থেকেছে এসএফআই’র মতো বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠন।
এসএফআই নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় ভর্তি ব্যবস্থা তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে ভর্তির সময় দুর্নীতি চালিয়ে যেতে সুবিধা করে দেবে। দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘২০১১ সালের পর থেকে এই ভর্তি ব্যবস্থা ব্যবসায় পরিণত করেছে তৃণমূল। আমাদের আশঙ্কা কেন্দ্রীয় ভর্তি ব্যবস্থায় গ্রামাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীরা শহরের কলেজগুলির ফর্ম তুলবে। যার ফলে গ্রামাঞ্চলের কলেজে আসন খালি থাকবে। আর সেই আসন টাকার বিনিময় বিক্রি করবে তৃণমূল।’’
দেবাঞ্জন বলেন, ‘‘একজন একজন পড়ুয়া ২৫টি বিষয় ২৫টি কলেজে ফর্ম ফিলাপ করতে পারবে। যদি কেউ ভর্তি হতে না পারে তাহলে কী হবে তার কোনও উত্তর নেই।’’
উল্লেখ্য, ফর্ম ফিলাপের টাকাও অনলাইনে জমা করতে হবে পড়ুয়াদের। কিন্তু সরকারি এই পোর্টালের সঙ্গে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের চুক্তি হয়নি। বেসরকারি একটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। কেন একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ককে দায়িত্ব দেওয়া হলো তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠন।
এসএফআই রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘এই কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা রাজ্যের বুকে শিক্ষা ব্যবস্থায় দুর্নীতির রাস্তা আরও চওড়া করে দিল। গোটা দেশে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয়ভাবে এনটিএ’র হাতে পরীক্ষার দায়িত্ব দিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে।’’
Comments :0