সংঘর্ষের মধ্যেই সোমবার ঢাকায় জমায়েতের ডাক দিয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। রবিবার সারাদিন সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯১। তার ওপর বিএনপি’র এই কর্মসূচি ঘিরে ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে পুরোদমে। আন্দোলনে জামাতের নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে বলে মত একাংশের।
সিরাজগঞ্জে কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশের নেতা এবং সাংবাদিক প্রদীপ ভৌমিককে হত্যা করা হয়েছে। তাদের জেলা কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে সিপিবি।
এদিন বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষে দেখা গিয়েছে আদালত পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। থানায় ঢুকে পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের দাবি, আন্দোলন রাজনৈতিক বিচারে নিয়ন্ত্রিত। ঘটনাক্রমের নিরিখে একটি অংশের মত জামাত শক্তিশালী হচ্ছে পুরো পরিস্থিতিতে। পরিস্থিতি সামলানোর ব্যর্থতার জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর দল আওয়ামি লিগকেও দায়ী করছে বড় অংশ।
৩০ জুলাই জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। তার জেরেই নতুন দফায় হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে ‘অসহযোগ আন্দোলন’ চলছে বলে মনে করছে একটি অংশ। সরকারি নির্দেশিকা জারি করে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর জামাত এ ইসলামি বিবৃতি জারি করেছিল ১ আগস্ট। ওই বার্তায় জামাতকে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে ‘নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান’ জানানো হয়েছিল। সেই সঙ্গে ‘সরকারের গণহত্যা, মানুষের অধিকার হরণ, জুলুম নিপীড়নের’ বিরুদ্ধেও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
জুনে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনে নিহত হন দু’শোর বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে চিলেন ছাত্রছাত্রীরাও। ভারতে বামপন্থী ছাত্র আন্দোলন ছাত্রদের ওপর নিপীড়ন এবং হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। সেই সঙ্গে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের হাত ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির সংগ্রামের ঐতিহ্য বহন করার আবেদনও জানায়।
নৈরাজ্য শক্ত হাতেে রোখার করার জন্য দেশবাসীর কাছে আবেদন করেছেেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভার পর একথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এবিএম সরওয়ার-ই-আলম।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খোদ প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা, সচিব, সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড, ফোর্সেস ইন্টিলিজেন্স ও এনএসআই এর প্রধানসহ এই কমিটির মোট সদস্য ২৯ জন।
অন্যদিকে রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা সহ সব বিভাগীয় সদর, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, শিল্পাঞ্চল, জেলা সদর ও উপজেলা সদরে কারফিউ জারি করেছে সরকার। রবিবার সেই দেশের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশজুড়ে সংঘাত দেখা দিলে গত ১৯ জুলাই মধ্যরাত থেকে দেশে কারফিউ জারি করা হয়। পরে পরিস্থিতির উন্নতি হলে কারফিউ শিথিল করার সময় ধারাবাহিক ভাবে বাড়াচ্ছিল সরকার।
শনিবার রাতে সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, ঢাকা মহানগর, ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা এবং নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে আজ থেকে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। তবে রবিবার পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় এখন গ্রাম এলাকা বাদে প্রায় সারা দেশেই সন্ধ্যা ছয়টা থেকে কারফিউ বলবৎ করা হয়েছে।
Comments :0