বাংলাদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সীমান্তে আমদানি রপ্তানি ব্যবসায় সাময়িক ধাক্কা লাগলেও মঙ্গলবার অনেকটাই স্বাভাবিক পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেল ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ঘোজাডাঙ্গায়। সাধারণ ভারতীয় এবং বাংলাদেশী যাত্রীদের যাওয়া আসাও এদিন লক্ষ্য করা গেল। তবে আতঙ্ক যেন তাড়া করে ফিরছে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষ, সাধারণ ব্যবসায়ী এবং সীমান্তে পরিবহণ শিল্পে যুক্ত মালিক এবং শ্রমিকদের। আতঙ্কিত আমদানি রপ্তানি ব্যবসায় যুক্ত ব্যবসায়ী, ক্লিয়ারিং এজেন্ট এবং তাদের অধীনে কয়েকশত যুক্ত কর্মচারী ও মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রের সাথে যুক্ত ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা।
অন্যান্য আর পাঁচটা স্বাভাবিক দিনের চাইতে মঙ্গলবারেও ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত ছিল থমথমে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কড়া নজরদারির মধ্যে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও খবর সংগ্রহ করতে পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও আধার কার্ড বা প্যানকার্ড বা অন্যান্য পরিচয় পত্র জমা রেখে যেতে হচ্ছে সীমান্তের শেষ প্রান্তে।
সোমবার বেলা বারোটার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় আমাদানি রপ্তানি ব্যবসা ও যাত্রী যাওয়া আসা। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় কার্ফু তুলে নেওয়া হলো। মঙ্গলবার থেকে খুলবে স্কুল কলেজ। স্বাভাবিক হবে পরিবহণ ব্যবস্থা। ভারতের মাটিতে বসে সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিক চ্যানেলে এই খবর সম্প্রচারিত হতেই আর নয় এবার বাড়ি ফিরতে হবে। এই মনোভাব নিয়ে এদিন বেলা বারটা নাগাদ ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তে চলে এসেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী মানুষ। এদিন বিকাল সাড়ে ৪ টের পর এদিনের মতো যাত্রী যাতায়াত ও আমাদানি রপ্তানি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার পরিস্থিতি একটু অনুকূলে আসতেই বৈধ উপায়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় ও বাংলাদেশী যাত্রী মিলিয়ে ভারতের এসেছেন ১০১ জন। ভারতীয় ও বাংলাদেশী মিলিয়ে বাংলাদেশে গিয়েছেন ২১০ জন। যা কিনা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গড়ে ৭০০-৮০০ যাত্রী যাওয়া আসা করেন। অন্যদিকে আমদানি রপ্তানি ব্যবসা স্বাভাবিক হয় এদিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ। তবে বাংলাদেশ থেকে ৫টি পন্যবাহী ট্রাক ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে এদেশে আসে। ভারত থেকে বাংলাদেশে যায় কিছু কাঁচামাল যেমন লঙ্কা পেঁয়াজ সহ ১৭৭টি পন্যবাহী ট্রাক। রপ্তানি অন্যান্য দিনের মতো প্রায় স্বাভাবিক। কিন্তু আমদানি তুলনায় অনেকটাই কম। আশাকরা যায় আমদানি বাড়বে বুধবার থেকে। এমনটাই মনে করছেন সীমান্তে আমদানি রপ্তানি ব্যবসায় যুক্ত ক্লিয়ারিং ও ফরোয়ার্ডিং এজেন্টরা।
অন্যদিকে সোমবারের পরে মঙ্গলবারও কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ফুলবাড়ির ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত শুরু হয়েছে নাগরিকদের। সীমান্ত পার করে দুই দেশের নাগরিকেরা যাতায়াত করছেন। এদিন চিকিৎসা সহ বিভিন্ন কাজে ভারতে আসা নাগরিকরা কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের পথে রওনা হয়েছেন। বাংলাদেশে অস্থিরতার কারণে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে জোর দেওয়া হয়েছে নজরদারির ওপরে। শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফুলবাড়ি বাংলাবান্ধা এলাকায় বাড়তি বিএসএফ মোতায়েন করে টহলদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কাঁটাতারের বেড়া পার করে যাতে কেউ ঢুকে পড়তে না পারে সেদিকে বিএসএফ সতর্ক নজর রাখছে। পন্যবাহী লরি চলাচল শুরু না হলেও এদিন বেলা দশটার পর থেকে প্রচুর মানুষ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের পথে ফিরে গেছেন।
Comments :0