দীর্ঘদিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নেতা হিসাবে, শিক্ষক হিসাবে পেয়েছি। এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে সব কথা বলা যায়না। শোক প্রস্তাবে আমরা তাঁর ভাবনার কথা উল্লেখ করেছি। আইসিইউ থেকে জেনারেল বেডে আসার পর সীতারাম ইয়েচুরি তাঁর বার্তা পাঠিয়েছেন।
বুদ্ধদা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন রাজ্যকে। তাঁর ভাবনা কাজের মধ্যে দিয়ে তিনি থাকবেন। তাঁর স্বপ্নকে রূপায়িত করার লড়াই জারি থাকবে।
বৃহস্পতিবার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্মরণসভায় একথা বলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনিই সভাপতি ছিলেন স্মরণসভায়। তিনি বলেন, স্মরণ সভা করি চোখের জল ফেলার জন্য নয়। শপথ নেওয়ার জন্য। আমাদের সমাজে, নিরাপত্তা, সমতা প্রতিষ্ঠা করা স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন। তাঁকে যখন মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে উৎখাত করার চক্রান্ত হলো তখন আমাদের দেশে সমতা, সাম্যের লড়াই চলছিল।
জাতি হিসাবে প্রজন্ম হিসাবে আমাদের স্বপ্ন কে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। মানুষকে ভাগ করার যখন প্রয়াস চলছে, বুদ্ধদার ভাষায় বলতে হয় উগ্র সাম্প্রদায়িকতা। তিনি শ্রমিক কৃষক মেহনতি মানুষের সাথে সম্পৃক্ত হতে চেয়েছিলেন। গর্বে র সাথে বলতে পারি তাঁর কাজ ও কথার মধ্যে কোন ফারাক ছিল না। তার লড়াই সংগ্রাম, শিল্প বোধ রুচি বোধ সেতু বন্ধন করেছিল।
সেলিম বলেন, আমাদের চোয়াল শক্ত করতে হবে। বুদ্ধদা থাকবেন মানুষের লড়াইয়ের মধ্যে। বেঁচে থাকার লড়াইয়ের মধ্যে, বাঁচিয়ে তোলার লড়াইয়ের মধ্যে। তিনি সবাইকে নিয়ে বাঁচতে চেয়ে ছিলেন। যুবদের বেকারির জ্বালা মোকাবিলার ভাবনা থেকে বিচ্যুত হননি। কৃষির সাফল্যকে সংহত করে গরিব ঘরের ছেলেমেয়েরা যাতে তাঁদের মেধা দিয়ে বাংলাকে গড়ে তুলতে পারে সেই চেষ্টা করেছিলেন।’’
সেলিম বলেন, রবীন্দ্র ভাবনার মধ্যে আছে পূর্ণতা প্রাপ্তি হবে না কিন্তু পূর্ণতা অভিলাষী হতে হবে। বুদ্ধদা এতে জোর দিতেন। আমরা তাঁকে স্মরণে সফল হব যদি তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রয়াস বাড়াতে পারি। যা ঘাটতি আছে তা পূরণ করার শপথ নিতে হবে।
আর জি কর প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, যে অন্যায় অনাচার হয়েছে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে, তার জন্য রাজ্য পথে নেমেছে। যখন লাশটা পোড়াতে চাইছিল তখন এই যুব-ছাত্র কর্মীরা গাড়িটা আটকেছিল। তাঁদেরই এখন আসামি সাজানো হচ্ছে। আসল আসামিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই অন্যায়ের শেষ করতে হবে। লাগাতার আন্দোলন সংগ্রামের তীব্রতা বাড়াতে।
বুদ্ধদার ভাষায় বলতে হবে এই লড়াই লড়তে হবে জিততে হবে।
Comments :0