নতুনপাতা
বইকথা
গা ছমছমে ভূতের গল্প
প্রদোষকুমার বাগচী
আজ তোমাদের ভূতের গল্প বলবো। ভূতের গল্প তোমরা আগে সবাই শুনেছো। অনেকে বলে, ভূতটুত নেই। কিন্তু যারা বলে তারাও জানে যে ভূতেরা আজও আছে। ভূতেরা আগে বনে বাদাড়ে থাকতো। এখন মানুষের ঘরের পাশেও থাকে। বিশ্বাস হচ্ছে না। তাহলে শোন। আমি একটা অলৌকিক বিড়ালের কথা বলছি। এই বিড়ালটা অনেক আগে এক ব্রাহ্মণ পুরোহিতের বাড়িতেই থাকতো। তখন ও যজমান ছিল ঐ বাড়ির। পুজো আচ্চা সবই হতো তার হাত দিয়ে। তার পর একদিন মরে ও অলৌকিক বিড়াল হয়ে গেল। কালো বিড়াল। একেবারে সত্যি গল্প। একদিন একটি লোক ওই বাড়িতে গিয়েছিল। বাংলাদেশের পার্বতীপুরে ছিল বাড়িটা। লোকটি যখন ভোরবেলা ওই বাড়ি থেকে পায়চারি করার জন্য বেরোচ্ছে দেখতে পেল একটি কালো বিড়াল দোতলার বারান্দায় স্থানুর মতো বসে আছে। একদম নড়ছে না। লোকটির কৌতূহল হলো। সে সামনে এগিয়ে এল বিড়ালটার। তবু বিড়ালটা নড়ছে না। বরং লোকটির দিকে ঠায় তাকিয়ে আছে। লোকটিও এগিয়ে গেল। বিড়ালটার দিকে ভালো করে তাকাতেই দেখা গেল বিড়ালটার চোখদুটি অস্বাভাবিক বড়। গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠার মতো। কিন্তু লোকটিও কম যায় না। তিনিও বিড়ালটির দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। হ্ঠালৎ বিড়ালটি পুরুষকণ্ঠে বলে উঠল— আপনার সঙ্গে আমার কথা আছে।মরে যাওয়ার পর আমার কোনও গতি হয়নি। আপনি তো ওদের গুরু। আমার একটা গতি করে দিন। লোকটি তখন জানতে চাইল কি করে এই অবস্থা ওর হলো। তখন জানালো যে ঐ বাড়ির পূজোর সব কাজ ওরা তাকে দিয়ে করাতো। কিন্তু সে খুব লোভী ছিল। ভোগ দেবার সময়ে, নৈবেদ্য দেবার সময়ে চূপ করে ভোগের প্রসাদ খেয়ে নিতো। শ্রাদ্ধের কাজেও টুকটাক করে জিনিস মুখে পুরে দিত। সেই পাপে তার আজ এত কষ্ট হচ্ছে। কেউ তার পিণ্ডদান করেনি। লোকটি বলল, এত বড় ঘটনা সে বাড়ির লোকদের জানালো না কেন। তখন সে বলল এসব শুনলে তারা ভয় পাবে তাই জানায়নি। তখন লোকটি বলল ঠিক আছে যতদিন না পিণ্ড দান না করা হয় ততদিন তোমার খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বিড়ালটা জানালো সে বেলগাছে থাকে। ঐ গাছের তলায় যেন তার খাওয়ার দেওয়া হয়। লোকটি তখন সবাইকে বলে তার জন্য একটা পূর্ণবয়স্ক লোকের মতো খাবারের ব্যবস্থা করে দিল। তারপর থেকে প্রতিদিন সকালে দেখা যেত যে কে যেন চেটেপুটে খেয়ে গেছে পুরো খাবার। পরে তার পিন্ডদান করা হয়েছিল। তারপর তাকে দেখা যায়নি আর। এই গল্পটা একদম সত্যি। এই রকমই আরও মজাদার রহস্যে ঘেরা ভূতের গল্পও যেমন আছে এই বইতে তেমনি আছে নানা অলৌকিক ঘটনার কথা। তোমরা বইটি হাতে নিয়ে দেখো। তোমাদের সকলেরই ভালো লাগবে। গল্পের কয়েকটি নাম বলে দিচ্ছি, যেমন — অলৌকিক খদ্দের, অভিশপ্ত ছবি, পেত্নীর দুঃখ ইত্যাদি।
ভয় পেওনা
শতদল ভট্টাচার্য। নিউ বেঙ্গল প্রেস। ৬৮, কলেজ স্ট্রিট। কলকাতা ৭৩।
Comments :0