রামশংকর চক্রবর্তী- তমলুক
"তৃণমূলকে চুরি করতে শিখিয়েছে শুভেন্দু অধিকারী। ও তৃণমূলে থেকে চুরি করে পালিয়েছে বিজেপিতে। ওর মতো অনেকেই চুরিতে হাত পাকিয়েছে আমাদের দলে থাকার সময়" বললেন মমতা ব্যানার্জি। তৃণমূল দল দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সমান দায়ী শুভেন্দু অধিকারী ও একথা কার্যত স্বীকার করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার মহিষাদলে তমলুকের তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি এবং সেই সমস্ত সম্পত্তি তৃণমূলে থাকার সময় যে হয়েছে তাও বলতে শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। তিনি বলেছেন "হলদিয়াতে সম্পত্তি কত? মাছ ধরতে যায় কতগুলি টলার? পেট্রোল পাম্প কতগুলো আছে? বাস, জমি সবকিছুই জানি। সবকিছুই করেছে আমাদের দলে থাকার সময়" এরপরই তিনি যুক্ত করেন "ওই গদ্দার আমার দলে ছিল সে কথা তো স্বীকার করতেই হবে। তৃণমূলকে চুরি করতে তো তুই শিখিয়েছিস গদ্দার। চুরি করে এখন বিজেপিতে পালিয়েছে। এরকম অনেককেই চুরি করা শিখিয়েছে। আমি সব জানতাম।"
শুভেন্দু অধিকারীর সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরতে ধরতে দিঘার প্রসঙ্গ বলেন মুখ্যমন্ত্রী। "একবার রিভিউ মিটিং করতে গিয়েছিলাম দীঘায়। গাড়িতে যেতে যেতে মুচকি হেসে বলেছিলাম যদি সরকারে না থাকি আমাকে দীঘায় ঢুকতে দিবি তো, তোরই তো জমিদারি। আমার কথা শুনেই রাগ করে গাড়ি থেকে নেমে গিয়েছিল ওই গদ্দার।" এদিন তৃণমূলের নির্বাচনী সভা কার্যত মমতা ব্যানার্জির স্বীকারোক্তির সভাতে পরিণত হয়েছিল। দুর্নীতিতে তিনি প্রশ্রয় দিয়েছিলেন এবং প্রতিটি দুর্নীতির তিনি সাক্ষী তা তিনি সদর্পে মঞ্চ থেকে ঘোষণা করলেন এদিন। নিয়োগ দুর্নীতির কথা বলতে গিয়ে সিপিআই(এম) সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। "ওই যে একজন সিপিএমের বিকাশ ভট্টাচার্য আছে যে সবার চাকরি খায়। তারই তো জুনিয়ার ছিল তমলুকের বিজেপির প্রার্থী। এখন গদ্দারের জুনিয়র হয়েছে। বিজেপির তো দুটি চোখ সিপিএম আর কংগ্রেস। এরা সব যুক্ত হয়ে ছাব্বিশ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়েছে। ভুল যদি কিছু করেও থাকি, বললে সংশোধন করে নিতাম। আড়াই লক্ষ পরিবারকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে এরা। আবার বলছে টাকা ফেরত দিতে হবে। শ্রমের বিনিময়ে টাকা পেয়েছে। টাকা ফেরত দেবে কেন? আমরা ওদের পাশে আছি। কোনও টাকা ফেরত দিতে দেবো না। পূর্ব মেদিনীপুরে যতজনের চাকরি গেছে সেই প্রত্যেক পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার মিছিলে হাঁটবে আমাদের প্রার্থীরা।" প্রসঙ্গত সূত্র অনুযায়ী পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় চাকরি বাতিলের সংখ্যা ৩০০০ এর কাছাকাছি। এই বিপুল সংখ্যায় একাংশ যোগ্যরাও রয়েছেন। কিন্তু অধিকাংশই অযোগ্য। টাকার বিনিময়ে চাকরি কিনেছে তারা। নিয়োগ দুর্নীতির প্রসঙ্গ সামনে আসার সময় থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শিরোনামে আসে। প্রথম থেকেই অভিযোগ ছিল এই জেলাতে দুর্নীতির পরিমাণ অনেক বেশি। মূলত শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই অভিযোগ ছিল জেলাবাসীর। এদিন মমতা ব্যানার্জির কথাতেও স্পষ্ট শুভেন্দু অধিকারী দুর্নীতিতে যুক্ত ছিল এবং তা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের থাকার সময়েই।
Comments :0