বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতা ও শহরতলি এলাকায় একাধিক বাস বাতিল হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, যে সব বাসের বয়স ১৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে সেসব বাস ১ আগস্ট, বৃহস্পতিবার থেকে বসিয়ে দিতে হবে। আর সেই অনুযায়ী অনেক বাসকে রাস্তায় দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। বৃষ্টির মধ্যে অফিস টাইমে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে অফিস যাত্রীদের। আর এই সুযোগে বেসরকারি ক্যাব পরিবহণ সংস্থা সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। ইতিমধ্যেই সল্টলেক, নিউটাউন রুটে তারা পরীক্ষামূলকভাবে বাস চালানো শুরু করেছে।
কলকাতা কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো বেসরকারি বাস চলে। আদালতের নিষেধাজ্ঞার জেরে ১ আগস্ট থেকে কলকাতায় প্রভাব পড়তে শুরু করল। সব থেকে বেশি প্রভাব পড়েছে কলকাতা-হাওড়া রুটে। সেই সঙ্গে হাবড়া, বসিরহাট, অশোকনগর, বারাসত, বারাকপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমতলা, কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার ও কলকাতা–বজবজ রুটের অনেক বাস এদিন রাস্তায় নামেনি। তার জেরে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়তে শুরু করেছে।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রকম পরিস্থিতি হতে পারে তা আগাম বুঝতে পেরে দু’দফায় মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বাস মালিকরা। তাতে এইসব বাস আরও দু’বছর চালানোর অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারি তরফে সবুজ সঙ্কেত পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ না থাকায় রাজ্য সরকার সেই আবেদনে তেমন করে সাড়া দেয়নি।
অনুমান করা হচ্ছে, আগামী সেপ্টেম্বর–অক্টোবর মাস থেকে শহর–শহরতলিতে বাসের সংখ্যা আরও কমবে। এই বিষয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘ এখনই এই নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু হয়নি। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশে ২০০৯ সাল থেকে ধাপে ধাপে ১৫ বছরের বেশি বয়সের বাসকে বাতিল করা হচ্ছে। তবে গত পাঁচ বছরে প্রায় ১৪০০ নতুন বাস রাস্তায় নেমেছে। রাস্তায় এখন যথেষ্ট সংখ্যক বাস আছে। কিছু বাস বসলেও তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না।’ পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, আদালতের রায়কে মান্যতা দিয়ে যেসব বাসের বয়স ১৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে তাদের আর রাস্তায় নামতে দেওয়া হয়নি। নিয়ম ভাঙলে গাড়ি আটক পর্যন্ত করা হবে। বিকল্প কী হতে পারে তা ভাবা হচ্ছে।
তবে মন্ত্রী যাই বলুন না কেন, এই বাস বসে যাওয়ার সমস্যা প্রথম দিনেই হাড়েহাড়ে টের পেয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মন্ত্রীর মন্তব্যের কোনও মিল খূঁজে পাওয়া যায়নি। বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের তরফে জানা গেছে, গত ছয় বছর ধরে বাসের ভাড়া বাড়েনি। এর মধ্যে পেট্রল–ডিজেলের দাম বাড়তে বাড়তে তা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। মেট্রোর জন্য বাসের আয়ও কমে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে নতুন বাস কেনার সাহস পাচ্ছেন না অনেক বাস মালিক। তাই বাস রাস্তায় ক্রমেই কমবে।
Kolkata Bus
আদালতের নির্দেশে কমছে পুরানো বাস
×
Comments :0