রামশংকর চক্রবর্তী
রাজ্য জুড়ে বিস্তর অভিযোগ আবাস যোজনা নিয়ে। তৃণমূল বিরুদ্ধে দলবাজি, স্বজনপোষণের অভিযোগ আছেই। এবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত আবাস তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়েছে ছয়টি পরিবারের। কেন? কারন এই পরিবার গুলি সিপিআই(এম)'র সমর্থক হওয়ায় আবাসের তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়েছে বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত। ঘটনা পাঁশকুড়ার মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের। ভগ্নপ্রায় মাটির বাড়িতে দিনের পর দিন থাকতে হয়। আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকায় প্রথম থেকেই নাম থাকলেও বাড়ি মেলেনি। আগে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল ক্ষমতায় ছিল। ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়।
শুধু সিপিআই(এম) সমর্থক হওয়ার কারনে আবসের তালিকা থেকে ছয় জনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বঞ্চিতরা। মাইশোরা এলাকার মাঠ যশোড়া গ্রামের ৬ টি পরিবারের অভিযোগ,তাঁদের নাম আবাস যোজনার তালিকায় ছিল। কিছুদিন আগে সমীক্ষাও হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বঞ্চিত বিজলি দোলই বলেন, "আমরা বরাবরই সিপিআই(এম)'র সমর্থক। মাটির ঘরে বসবাস করি। সরকারি আবাস যোজনায় প্রকৃত প্রাপক সত্ত্বেও আমাদের নাম বাদ গেছে। খোঁজ নিয়ে জেনেছি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বাদ দিতে বলেছে। আমরা বিজেপিকে সমর্থন করলে তবে মিলবে ঘর। এমনই নির্দেশ।"
জয়দেব দোলই নামে আরও একজন বলেন, " আবাসের তালিকায় আমার নাম ছিল। সমীক্ষাও হয়েছে। তারপর জানতে পারি আমার নামের উপর লাল কালি দেওয়া হয়েছে। আমি সিপিএম করি বলেই আমার নাম ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।"
এই ঘটনা নিয়ে যদিও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কিছু বলতে চাননি। অন্যদিকে দুতালা পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও নাম আছে আবাস তালিকায়। কারন সেই ব্যক্তি সম্পর্কে তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাবা। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট ব্লকের সিদ্ধা ২ গ্ৰাম পঞ্চায়েত তৃনমূলের দখলে। সেই তৃনমূল পরিচালিত গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান হামিদুল খানের বাবার নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। এমন অভিযোগ তুলে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছেই লিখিত অভিযোগ জমা হয়েছে।
এই দুটি ঘটনায় প্রাক্তন সিপিআই(এম) বিধায়ক ইব্রাহিম আলি বলেন, “আবাস যোজনায় দুর্নীতিতে তৃণমূল ও বিজেপির কার্যকলাপ একই। যেখানে বিজেপি পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে সেখানে শুধুমাত্র সিপিআই(এম) সমর্থক হওয়ায় তাদের বঞ্চিত করছে। আর তৃণমূল ব্যাপক স্বজনপোষণ, দলবাজি করছে। এই দুটি দল পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে লুটের পঞ্চায়েতে পরিনত করেছে।”
Comments :0