লব মুখার্জি
দক্ষিণেশ্বরের রেল বস্তি উচ্ছেদ করতে এসে ফের প্রতিরোধের মুখে পড়ল আরপিএফ। বুধবার দক্ষিণেশ্বর স্টেশন থেকে মন্দিরগামী অংশে নিবেদিতা সেতুর নিচে এবং স্কাইওয়াকের নিচের দু"পাশে রেলের অব্যবহৃত জমিতে ৫ দশকেরও বেশি সময়কাল ধরে বসবাস করছেন এই বস্তির বাসিন্দারা। তাঁদের উচ্ছেদের জন্য গত দু-তিন বছর ধরে লাগাতার ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ।
এই বাসিন্দারা রিকশা অটো টোটো চালক, দিনমজুরি, নির্মাণ শ্রমিক, হোটেল কর্মচারী, হকার, সাফাই কর্মী, গৃহ সহায়িকা, ঠিকা শ্রমিকের মতো অসংগঠিত ক্ষেত্রের নানা পেশায় নিযুক্ত। বহু পরিবারে রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীরা। রয়েছেন বয়স্করা। বস্তির আশপাশের অঞ্চলেই মূলত বিভিন্ন পেশার কাজে এখানকার মানুষজন যুক্ত আছেন। দক্ষিণেশ্বর রেল কোয়ার্টারের বেশিরভাগ ফাঁকা পড়ে আছে। রেল সেখানে তাদের কর্মচারীদের থাকার মত উপযুক্ত ব্যবস্থা করে না। রেল কোয়ার্টার সংলগ্ন রেলের বিস্তীর্ণ অব্যবহৃত জমি। সেই জমিরই একটি ছোট অংশে দক্ষিণেশ্বর রেল বস্তি। রাজ্য জুড়ে রেলের জমিকে কর্পোরেটদের হাতে সস্তায় তুলে দেওয়ার জন্য রেল কর্তৃপক্ষ তথা কেন্দ্রীয় সরকার চক্রান্ত শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠেছে , এই বেআইনি কাজ কিভাবে সম্ভব? কারণ , রাজ্য সরকারের জমিতে এই রেল কোয়াটার তৈরি সময় চুক্তিতে বলা হয়েছিল যে রেল পরিকাঠামো ব্যতীত অন্য কোন ব্যবসায়িক কাজে এই জমি রেল ব্যবহার করতে পারবে না।
দক্ষিণেশ্বর রেল বস্তির বাসিন্দারা দাবি করছেন, ওখানেই তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ পেট চালানোর জন্য সমগ্র বস্তিবাসী আশপাশের বিভিন্ন পরিষেবা মূলক কাজে মেহনত করে থাকেন। অন্যত্র থাকলে পেশার উপরেও আক্রমণ নেমে আসবে।
প্রতিবারই বস্তি বাসিন্দাদের অবস্থান বিক্ষোভের জেরে রেল কর্তৃপক্ষ রণে ভঙ্গ দিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে। প্রতিবারই বস্তিবাসীদের বিরুদ্ধে রেল মামলা দায়ের করেছে। যার ফলে বস্তি বাসিন্দাদের অনেককেই আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। বুধবারও বস্তির বাসিন্দাদের সাথে রেল কর্তৃপক্ষ বচসা সাহা হয়। বস্তির বাসিন্দাদের অবস্থান-বিক্ষোভের ফলে আরপিএফ এবং রেল পুলিশ ফিরে যেতে বাধ্য হয়।।
Comments :0