দীপশুভ্র সান্যাল: জলপাইগুড়ি
দীর্ঘদিন থেকে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে গজল ডোবার ভোরের আলো থানার সামনে থেকে মান্তাদারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বোদাগঞ্জ বাজার পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা। এই রাস্তার পাশেই রয়েছে ভোরের আলো থানা, দুধিয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র, টাকিমারীর মতো বড় বাজার, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র। রয়েছে একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভ্রামরী দেবী মন্দিরের মতো পর্যটনের স্থানও এই রাস্তায়।
অথচ প্রতিদিন প্রাণ হাতে এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন কয়েক হাজার বাসিন্দা, ছাত্র-ছাত্রী এবং ছোট ব্যবসায়ীরা। টাকিমারি চরকে রাজগঞ্জের শস্য ভান্ডার বলা হয়। এখানে প্রচুর রবি শস্য হয়। এখানকার রবিশস্য শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি শহরে যায়। সব্জি নিতে আসা ট্রাক চালকরা চরম কষ্টেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন।
টাকিমারি চরের কৃষক রতন শর্মা জানান, অতীতে বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে রাস্তাটি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মধ্য দিয়ে ভালো করা হয়েছিল। বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদের মেয়াদে, বামফ্রন্ট সরকার যাওয়ার পরও, রাস্তা ভাঙলেও সারাই হতো। তৃণমূল জমানায় দলের নেতা গৌতম দেব পর্যটনমন্ত্রী থাকার সময় বলেছিলেন গজলডোবা থেকে পর্যটকরা যাতে খুব সহজে ভ্রামরী দেবী মন্দিরে যেতে পারেন তার জন্য মজবুত করে এবং চওড়া করে রাস্তাটি বানানো হবে। এরপর কেটে গেছে পাঁচটি বছর। রাস্তায় এক বালতি পিচও পড়েনি। রাস্তা দিয়ে প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করায় রাস্তা আরও বেহাল হয়েছে। বর্তমানে দূর থেকে দেখলে পুকুর মনে হবে।
এলাকার ছোট কাপড়ের দোকানদার মিলনবালা মন্ডল বলেন, ‘‘মিলন পল্লী বাজারে আমার ছোট্ট দোকানে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি থেকে কাপড় নিয়ে আসি অনেক কষ্ট করে।’’ গৃহবধূ ইতি বৈরাগী বলেন, ‘‘আমার মেয়ে এখান থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গজলডোবা হাইস্কুলে যায়। রাস্তার এমন চরম অবস্থার জন্য বর্ষার সময় স্কুলে খুব কম যায়।’’
স্থানীয়রা বলছেন, ভরা বর্ষায় ডুয়ার্সের পাহাড়ি নদী থেকে চলছে বালি, মাটি,আর বি এম, পাথর তোলা মালবাজার, ওদলাবাড়ি হয়ে গজলডোবা তিস্তা ব্রিজ হয়ে মান্তাদারি বোদাগজ্ঞের রাস্তা দিয়ে এই পথেই চলছে চোরাচালান। বিপজ্জনক গর্ত দেখা যাচ্ছে গজলডোবা ব্রিজে। ডাম্পার চলাচলের কারণে জলপাইগুড়ি থেকে গজলডোবা রাস্তা পুকুরে পরিণত হয়েছে। যার ফলে বিপাকে জলপাইগুড়ির পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
Comments :0