অনিন্দিতা দত্ত- শিলিগুড়ি
অবশেষে শীতের প্রথম ছোঁয়া শিলিগুড়ি শহরে। চলতি বছর নভেম্বর মাস শেষ হয়ে ডিসেম্বরের শুরু হলেও শীত যেন একেবারেই উবে গিয়েছিলো শহর থেকে। গরম জামা গায়ে রোদে বেড়িয়ে ঘরে ঢুকতেই রীতিমত ঘাম ঝরছে। আবার রাতে হালকা ঠান্ডা। কেউ বা হালকা ফ্যানও চালাচ্ছেন। এইরকমই ছিলো আবহাওয়া। সেভাবে ভারি গরম পোষাক বের করতে হয়নি। কিন্তু ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটলো। শুক্রবার সকাল থেকেই শহরে শীতের ছোঁয়া। প্রথম কুয়াশাচ্ছন্ন শহর দেখে মুগ্ধ শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দারা। খুব সকালে অনেকেই সেই দৃশ্য উপভোগ করেছেন।
তাপমাত্রার পারদ নামতেই শীতবস্ত্র উঠেছে সকলের গায়ে। উৎসবের মরশুম শেষ হতেই প্রতিবছরের মতো এবছরও নানা গরম পোষাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন শহরের ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। শুরু হয়ে গেছে পাহাড় থেকে নেমে আসা ভুটিয়াদের নিয়ে শিলিগুড়ি ভুটিয়া মার্কেটের ব্যবসাও। কিন্তু শীত না পড়ায় ব্যবসা ঠিক সেভাবে জমছিলো না। শহরের অন্যান্য গরম পোষাকের বাজারও ছিলো একরকম ক্রেতাশূন্য। শীতের উপকরণে ভরপুর শহর শিলিগুড়িতে শীতের অপেক্ষায় ছিলেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সকলেই। শুক্রবার শীতের কামড় পড়তেই ভুটিয়া মার্কেটের গরম জামাকাপড় বিক্রেতারাও বেশ খুশি।
শিলিগুড়িতে গেলেই একবার যেতে মন চায় শিলিগুড়ির ভুটিয়া মার্কেটে। শীত বস্ত্রের সম্ভার নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন ভুটিয়া মার্কেটে। সকাল থেকে রাত প্রর্যন্ত খোলা থাকে এই মার্কেট। সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত এই মার্কেট চলে। বহু বছর ধরে চলা এই মার্কেট শিলিগুড়িতে শীতের বিশেষ আকর্ষণ। পাহাড়ে কেউ বেড়াতে গেলে এই মার্কেট থেকে সোয়েটার, চাদর সহ নানান রকম শীত বস্ত্র কিনে আনেন। চলতি শীতের মরসুমে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় শীত বস্ত্র কেনাকাটায় জমে উঠেছে ভুটিয়া মার্কেট। এই শীতের বাজারে শাল, সোয়েটার, ক্যাপ, গ্লাভস, জ্যাকেট, মাফলার, স্টোল এবং আরও অনেক পশমী পোশাক রয়েছে। দোকানিরা মূলত দার্জিলিঙ পাহার থেকে আসেন। বেশির ভাগ জিনিসপত্রের দাম সাধ্যের মধ্যে।
এদিন সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন ছিলো শিলিগুড়ি শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চল। সকাল থেকেই রোদের মুখ দেখা যায়নি। উত্তরের ঠান্ডা হাওয়া বইছিলো। দুপুর তিনটের পর থেকেই প্রায় অন্ধকার নেমে আসে। উত্তরের হাওয়া আরো কনকনে হয়। শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকে। বিকেল পাঁচটায় অন্ধকার নেমে আসে। সন্ধ্যের পরে শহরের রাস্তাঘাটও অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়। যানবাহনের সংখ্যাও অন্যান্য দিনের চাইতে কমে আসে। শহরের বুকে শীতের উপস্থিতি অনেকটাই জানান দিয়েছে এদিন। তাপমাত্রা আরো কমার আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড় মানেই কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার ইচ্ছে থাকে সকলেরই মনে। শীতের ছোঁয়ায় অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পাহাড়ের বিভিন্ন ট্যুরিষ্ট স্পটগুলোতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। কালিম্পঙের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলিতেও পর্যটকদের ভিড় উপছে পড়েছে।
Comments :0