Israel Gaza War

মোদী সরকারকে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করতে বলল নাগরিক সমাজ

জাতীয়

তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াহকে হত্যার বিষয়ে, ভারতীয় নাগরিক সমাজের সদস্যরা,  অর্থনীতিবিদ জাঁ দ্রেজ, লেখিকা অরুন্ধতী রায়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ এবং সিপিআই(এম) নেত্রী বৃন্দা কারাত সহ অনেকে দিল্লির প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে মিলিত হন। চলতে থাকা ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষে ভারত সরকারের অবস্থানের সমালোচনা করতে তাঁরা জড় হন।

উপস্থিতদের এবং মিডিয়াকে সম্বোধন করে, রায় বলেন যে ভারতের জনগণ ইজরায়েলের প্রতি সরকারের সমর্থনের বিপক্ষে এবং ইজরায়েলকে প্যালেস্তাইনে গণহত্যা করার জন্য অভিযুক্ত করে বলেন যে ভারত সরকার কেবল ইজরায়েলকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহই করেনি বরং হাতে তুলে দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলে ভারতীয় শ্রমিকরা সংকটে। রায় অবিলম্বে ইজরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ এবং ভারতীয় শ্রমিকদের ফিরয়ে নিয়ে আসার দাবি জানান।

দ্রেজ গাজা স্ট্রিপের মানবিক সংকটকে তুলে ধরেন এবং জোর দিয়ে বলেন যে ভারত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস (ICJ) এর রায় লঙ্ঘন করেছে, যা স্পষ্টভাবে ইজরায়েলকে গাজার ওপর অবৈধ দখলদারী বন্ধ করার আহ্বান জানান। ‘‘খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার অধিকারের উপর হামলা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ইজরায়েলের সাথে সমস্ত সহযোগিতা বন্ধ করার দাবি করার জন্য যথেষ্ট,’’ তিনি বলেন।
দ্রেজ এই যুদ্ধাপরাধের অবসান ঘটাতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য ভারত সরকারের সমালোচনাও করেন, এবং ইজরায়েলি সরকারের ‘অবিচল মিত্র’ বলে অভিযুক্ত করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে ভারত ইজরায়েলের জন্য সামরিক উপকরণ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলিকে ভর্তুকি দেয়, প্যালেস্তিনীয় শ্রম বাজারকে সংকটে ফেলার জন্য ভারতীয় শ্রমিক পাঠায় এবং অভ্যন্তরীণভাবে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে দমন করে। ‘‘এমনকি রাষ্ট্রসংঘেও,’’ দ্রেজ উল্লেখ করেন, ‘‘ভারত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইজরায়েলকে নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে প্রস্তাব পাস করার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থেকেছে।’’

মানবাধিকার কর্মী এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সমাবেশকে স্মরণ করিয়ে দেন যে ভারত গণহত্যা কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী যা ৯ ডিসেম্বর ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত প্রথম মানবাধিকার চুক্তি।
তিনি মোদি সরকারকে এই চুক্তি এবং, বৃহত্তর ক্ষেত্রে ভারতীয় সংবিধান লঙ্ঘন করার জন্য অভিযুক্ত করেন। ভূষণ বলেন যে সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদ শুধুমাত্র ভারতীয় নয় বরং বিশ্ব নাগরিকদের জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে রক্ষা করে এবং ইজরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি করার সাথে জড়িত কোম্পানিগুলির অস্ত্র লাইসেন্স প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়ে এই কাজের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার দাবি জানান।

বৃন্দা কারাত বলেন যে এই সমস্যাগুলি অবশ্যই সংসদে উত্থাপন করা উচিত এবং দাবি করেন যে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই বিষয়ে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারক, অর্থনীতিবিদ, সমাজকর্মী এবং কবি সহ ২৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক রাজনাথ সিংকে চিঠি লিখে লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া বন্ধ করার আহ্বান জানান যা রপ্তানিকারকদের ইজরায়েলে সামরিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাঠানোর অনুমতি দেয়।

Comments :0

Login to leave a comment