DUSARBELA

মুক্তগদ্য

সাহিত্যের পাতা

SAHITYER MUKTODHARA

মুক্তধারা

মনীষ দেব

নদীর কোনও দেশ নেই — নেই গ্রাম;  রোদ আছে — আছে বৃষ্টি — কুয়াশা ঢাকা ভোর — লন্ঠন জ্বালা রাত — ভোরের কাক — সে পেরিয়ে যায় হলুদ দুপুর, ধূসর মাঠ, শ্যামলী গ্রাম, রূপোলী চাঁদের আলো, রূপোলী ইলিশ বুকে নিয়ে। ডিঙির বুকে ভোরের আজান, এপারে বোষ্টমীর গান, ওপারে সারশি আকাল, আকাশের তারায় মেরী ক্রিসমাস। উতলা নদী তুমি উৎসবে — অনুভবে — জীবনে।

নদী তুমি মুক্তধারা — তোমার কোনও দেশ নেই। তোমার পুবের ঘাটে যখন সন্ধ্যে নামে — তখন পশ্চিমের ঘাটে সূর্যোদয় — তুমি আলো পেরিয়ে আঁধারে, আবার আঁধার পেরিয়ে আলোয়।

 

নদী — চিকণধারার বাঁকে যেথায় তুমি রূপসী, সেথায় এপার ওপার একাকার রূপশালী ধানের মাঠে। হলুদ সরষে ফুলের খেতে, নীল রঙে আঁকা তুমি নদী। তোমার চড়ার বুকে ভোরের শালিকেরা ঝগড়া করে দল বেধে। কলার খোলায় প্রদীপ জ্বেলে তোমার বুকে ভাসায় কোনও দুঃখিনী মেয়ে — দীপান্বিতার আলো, ঘোর অমাবস্যায়। তুমি অমাবস্যার নদী — কালপুরুষের নদী।

       নদী — শুধু বয়ে যাও
                  বয়ে যাও 
                  বয়ে যাও
                  তোমার উত্তরের ঘাটে জল নিয়ে ফেরে — রূপসা-রুবেনা-আয়েষা-আশা’রা যখন — তখন দক্ষিণের ঘাটে অস্থি ভাষায়, মাতৃহারা শৈশব, সে তার                            মায়ের শেষ চিহ্ন টুকু রেখে যায় তোমার বুকে নদী — নদী তুমি মায়ের মতো,ভালবাসার মতো।

নদী তুমি এই ধূসরবেলায় — কবি কে বলো — তাঁর আবদুল মাঝি কি এখনও ডিঙি নৌকা নিয়ে যায় পদ্মায়। কবি তোমার জোড়াসাঁকো পারের নদীতে এখনও খেয়া বায় সময় — উতল হাওয়া লাগে তোমার গানের তরণীতে.... আর অশ্রুনদীর সাগরপারে তুমি ভেসে যাও — নদী, মুক্তধারার মতো….।

Comments :0

Login to leave a comment