জাতীয় স্তরে প্রতিযোগিতামূলক ২৫টি পরীক্ষার ভার দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে। অথচ এই এনটিএ’র ২৫ জন স্থায়ী কর্মী নেই। পরীক্ষা ব্যবস্থার কেন্দ্রীকরণ করে ‘এন্ট্রান্স মাফিয়া’ তৈরি করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। নিট, ইউজিসি-নেট সহ পরপর পরীক্ষা ঘিরে অপদার্থতার পরও বাতিল করা হচ্ছে না এনটিএ-কে।
দেশজুড়ে পরীক্ষা এবং শিক্ষা ঘিরে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদে ৭-দফা দাবি সামনে রেখে ছাত্র ধর্মঘট ডাকল এসএফআই। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস এবং সর্বভারতীয় সভাপতি ভিপি সানু ৪ জুলাই এই ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সব ছাত্রছাত্রীকে।
এসএফআই বলেছে, পরিস্থিতির জন্য দায়ী কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক। কেবলমাত্র আরএসএস’র অনুগামী হওয়ার মাপকাঠিতে অযোগ্য অপদার্থ লোকজনকে বসানো হয়েছে শিক্ষা প্রশাসনে। সেই সঙ্গে স্কুল শিক্ষায় বিপজ্জনক পরিস্থিতিকে মনে করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২’র মধ্যে দেশে বন্ধ হয়েছে ৬১ হাজার ৮৮৫টি স্কুল। তার মধ্যে ৬১ হাজার ৩৬১টি সরকারি স্কুল। এসএফআই বলেছে, সরকারি স্কুল বন্ধ হয়ে বাড়ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। প্রান্তিক এবং নিম্নবিত্ত পরিবারের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ।
ডাক্তারির স্নাতক স্তরে ভর্তির প্রবেশিকা ‘নিট’-র ফল বের হয় ৪ জুন। একের পর এক বেনিয়ম বের হতে থাকে। একাংশকে গ্রেস নম্বর দেওয়া, প্রথম স্থানে ৬৭ জন, পরীক্ষার নিয়মে পাওয়ার সুযোগই নেই এমন নম্বর দেওয়া, একই নম্বরে গতবারের তুলনায় মেধাতালিকায় স্থান কয়েক হাজার পিছিয়ে যাওয়া, প্রশ্ন ফাঁস ঘিরে আটক-গ্রেপ্তারি বের হচ্ছে রোজ। প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার পরীক্ষা নেওয়ার পরদিনই বাতিল হয় ইউজিসি-নেট, যে পরীক্ষা থেকে সহকারী অধ্যাপক এবং গবেষক নিয়োগ করা হয়। এরপর বাতিল হতে থাকে স্নাতকোত্তরের নিট, সিএসআইআর নেট’র।
এসএফআই বলেছে, ‘‘পরপর ঘটনায় এনটিএ’র অপদার্থতা বেআব্রু হয়েছে। কয়েক বছর ধরেই লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষার কেন্দ্রীকরণে উদ্বেগ জানিয়েছে। যার হাত ধরে বেসরকারিকরণ, প্রবেশিকা বা এন্ট্রান্সে কোচিং সেন্টারের দাপট বেড়েছে। ‘এক দেশ, একটিই পরীক্ষা’ স্লোগান তুলে পরীক্ষা পদ্ধতিকেই বিপর্যস্ত করা হয়েছে। লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে।’’
এসএফআই’র দাবি, এনটিএ’র মাধ্যমে পরীক্ষার কেন্দ্রীকরণ বাতিল করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০১৭-তে এনটিএ চালুর আগে মেডিক্যালে রাজ্যস্তরের কলেজে পরীক্ষা হতো রাজ্যস্তরে। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা নিত সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়, এমন কেন্দ্রীকরণ ছিল না। পরিস্থিতির দায় নিয়ে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছে এসএফআই।
মেডিক্যাল নিট এবং ইউজিসি নেট ঘিরে বেনিয়মে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রছাত্রীদের ক্ষতিপূরণেরও দাবি জানিয়েছে এসএফআই। পিএইচডি’র জন্য নেট’র নম্বর বাধ্যতামূলক না করার দাবি জানিয়েছে। চালু অন্য পরীক্ষাতেও কেন্দ্রীকরণের চেষ্টা হচ্ছে, ‘এন্ট্রান্স মাফিয়া’ তৈরির ব্যবস্থা হচ্ছে। এই মতলব বাতিল করতে হবে। এসএফআই’র দাবি, মুম্বাইয়ের ‘টিস’ থেকে হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়- সর্বত্র ছাত্র আন্দোলনের নেতানেত্রীদের দোষী বানানোর নানা অছিলা খোঁজা হচ্ছে। ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক স্বর দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই চেষ্টা বাতিল করতে হবে। দেশজুড়ে হাজার হাজার স্কুল বন্ধ করার পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে।
SFI CALLS STRIKE
৪ জুলাই দেশজুড়ে ছাত্র ধর্মঘটে ডাক এসএফআই’র
×
Comments :0