মোদী সরকারের বিশ্বাসভঙ্গের জবাব দিতে দেশজুড়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষক, খেতমজুররা। কোনও ব্যারিকেড, বুলডোজার দিয়ে তা রোধ করতে পারবে না এই সরকার। বৃহস্পতিবার এই কথা সাফ জানিয়ে দিলেন সংযুক্ত কিষান মোর্চার নেতৃবৃন্দ।
এদিন মৌলালি যুবকেন্দ্রের বিবেকানন্দ সভাঘরে সংযুক্ত কিষান মোর্চা (এসকেএম) পূর্বাঞ্চলীয় সমন্বয় সভা শেষে এক সাংবাদিক বৈঠকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কৃষক আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, যাঁরা বলেন মোদী অদম্য, তাঁরা সত্যের অপলাপ করছে সব জেনে বুঝেই। আমরা পারি কারণ আমরা দেশের সব প্রদেশের সব অংশের নিপীড়িত ও সবদিক থেকে বঞ্চিত কৃষক, খেতমজুর। তার প্রমাণ দিয়েছে ২০২১ সালের অদম্য কৃষক আন্দোলন। এই মোদী সরকার বাধ্য হয়েছিল আমাদের স্মারকলিপি হাতে নিয়ে কথা শুনতে। আমরা যে যে দাবি রেখেছিলাম তার মান্যতা দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু তা রক্ষা করেনি। তাই আড়াই বছর পরে আবার আমরা তৈরি হচ্ছি এই বিশ্বাসভঙ্গের যোগ্য জবাব দিতে। সারা দেশ জুড়েই চলছে তার ব্যাপক প্রস্তুতি।
মৌলালি যুবকেন্দ্রে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা— পূর্বাঞ্চলের এই চার রাজ্যের কৃষক সংগঠনগুলির নেতৃবৃন্দ গত বুধবার মিলিত হয় ২দিনের এই সমন্বয় সভায়। এদিন সমন্বয় সভা শেষে এসকেএম নেতৃত্ব জানান, ফসলের সুসংহত সহায়ক মূল্য, জমি অধিগ্রহণে স্বচ্ছ নীতি, অরণ্য ও প্রকৃতি রক্ষা, সারা দেশে অনুমোদিত মজুরি প্রদান, খেতমজুর তথা কৃষি মজুরদের জীবনধারণের জন্য সঙ্গত মজুরি, সমবায়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে কৃষকের কাছে বীজ, সার, সেচ ও বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির আজ পর্যন্ত কোনও সমাধান করেনি মোদী সরকার। উলটে দমনপীড়ন বেড়েছে। এর যোগ্য জবাব দেবে এবার আরও বৃহত্তর কৃষক আন্দোলন। আমরাই বাধ্য করব এই সরকারকে নতিস্বীকার করতে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মোর্চার সর্বভারতীয় নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি দেশের চারটি প্রান্তে হবে অধিকার আদায়ের বৃহত্তর সমাবেশ। তার আগে দেশের সব রাজ্য, সব জেলার ব্লকস্তর পর্যন্ত আমাদের দেশের কৃষক সহ সর্বস্তরের জনগণের গণতান্ত্রিক দাবিগুলি নিয়ে আন্দোলন ও প্রচার হবে। প্রচার হবে জাতীয় জনজীবনের মর্যাদা রক্ষার বিষয় নিয়ে। ধর্ম-বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে জীবন ও জীবিকা রক্ষার এই আন্দোলনকে ছড়িয়ে দিতে সর্বত্র চলছে তারই প্রস্তুতি।
তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনের ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই মোদী-শাহের দাঁত, নখ কোনও হুমকিতেই ডরাই না। আমরা দুর্বার প্রতিরোধ গড়বোই। এই প্রতিরোধই হবে আমাদের চরমপত্র।
এদিনের সংবাদিক বৈঠকে নেতৃত্ব জানান, মোর্চার চারটি আঞ্চলিক পর্যায়ে চূড়ান্ত আলোচনার পরেই আমারা ঘোষণা করে দেবো বিস্তারিত কর্মসূচি। এদিন এই সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন ড. দর্শন পাল, ড. সুনীলম, অভীক সাহা, শঙ্কর ঘোষ, কার্তিক পাল, আশিস মিত্তাল, রাভুলা ভেঙ্কাইয়া, বিপ্লব মজুমদার প্রমুখ।
Farmers are preparing to launch a movement
দেশজুড়ে লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষক-খেতমজুররা
×
Comments :0