ধর্মতলা থকে হাওড়া ময়দান থেকে মেট্রো পরিষেবা চালু হওয়ার পর থেকে ওই রুটে বেসরকারি বাসের যাত্রীর সংখ্যা কমেছে বলে দাবি করছেন বাস চালক ও কর্মীরা। সেই সগে ফেরিতেও কমছে যাত্রী। হাওড়া ময়দান থেকে ধর্মতলায় মেট্রোয় তিল ধারনের জায়গা না থাকলেও খুশি যাত্রীরা। গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো রেল চেপে হাওড়া ময়দান থেকে ধর্মতলা যেতে সময় লাগছে দশ মিনিট। কম সময়ে স্বাচ্ছন্দে প্রতি দিন হাওড়া ময়দান থেকে ধর্মতলায় যাতায়াত করছেন কয়েক হাজার যাত্রী। অথচ হাওড়া ময়দান থেকে ধর্মতলা যাতায়াতকারী বেসরকারি বাসগুলো যাত্রীর অভাবে বন্ধ হতে বসেছে। নতুন করে কাজ হারানোর আশঙ্কা কয়েশত পরিবহন কর্মীর।
হাওড়া ময়দান হাওড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র। এখান থেকে প্রতিদিন কাজে হাওড়া ব্রিজ হয়ে কলকাতার বড়বাজার, মহাকরণ ও ধর্মতলায় যাতায়াত করেন হাজার হাজার মানুষ। মেট্রো রেল চালু হবার আগে এই সকল যাত্রীদের যাতাযাত করতে হতো বেসরকারি বাসে। বেসরকারি বাসের উপর ভরসা করেই যাতায়াত করতে হতো যাত্রীদের। যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে হাওড়া ময়দান থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত চালু হয় বেসরকারি সি রুটের বাস। এছাড়াও হাওড়া ময়দান হয়ে ধর্মতলায় যাতায়াত করতো ৫২, ৫৫এ , ৫৯ নং রুটের বাসের পাশাপাশি বহু রুটের মিনি বাস। প্রতি দিন বাস চালিয়ে বাসের চালক, কন্ট্রাক্টরদের কমিশন দিয়েও বাস মালিকদের হাতে থাকতো বেশ কিছু টাকা। আর এখন মেট্রো রেল চালু হওয়ায় যেমন যাত্রী সংখ্যা কমেছে তেমনি বাস মালিকরা সমস্ত খরচ দিয়ে নামমাত্র টাকা হাতে পায়। ফলে বাস চালাতে আর ইচ্ছুক নন বাস মালিকরা।
বাস মালিকরা জানান আগের থেকে বাসের যাত্রী সংখ্যা কমেছে ৭৫ শতাংশ। প্রতিদিন জ্বালানীর দাম বাড়ছে, তার সাথে গাড়ির রক্ষণাবেক্ষনের খরচ যেভাবে বাড়ছে তাতে করে আর বাস চালানো সম্ভব নয় বলে জানান বাস মালিকরা। নতুন করে বাস মালিকদের চিন্তা বাড়িয়েছে আদালতের নির্দেশে ১৫ বছরের পুরাতন বাস বাতিলের আদেশ। সি রুটের অধিকাংশ বাসের ১৫ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৪ সালে। ফলে পুরাতন বাস বাতিল করে নতুন বাস রাস্তায় নামাতে হবে বাস মালিকদের। নতুন করে আর বাস রাস্তায় নামাতে চাইছেন না বহু বাস মালিক।
বাস কন্ট্রাক্টর জয়দেব দে বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর বাসের কন্ডাক্টর হয়ে কাজ করে পরিবারের সদস্যদের মুখে দুই বেলার খাবারের ব্যবস্থা করতাম। বর্তমানে বাসের যাত্রী সংখ্যা কমে যাওযায় তাদের আয়ও কমেছে। ফলে চরম অসুবিধায় পড়েছেন সি রুটের বহু কন্ট্রাক্টর। তিনি বলেন বহু বাসের চালক, কন্ট্রাক্টররা পরিবহন শ্রমিকের কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে চলে যাচ্ছেন। নতুন করে আর কেউ পরিবহনের কাজে যোগ দিচ্ছেন না।’’
বাস চালক মহম্মদ নাসির বলেন, ‘‘আগে প্রতিদিন কমিশন বাবদ যে টাকা পাওয়া যেত তা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন মতে চলে যেত। কিন্তু বর্তমানে সারাদিন বাস চালিয়ে দিনের শেষে যে সামান্য টাকা কমিশন হিসাবে হাতে আসে তা দিয়ে পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণ করা যায় না। তাই বাধ্য হয়ে বহু পরিবহন শ্রমিক কাজ ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।’’
Howrah Maidan to Esplanade Metro Rail
ধর্মতলা থকে হাওড়া, কাজ হারানোর আশঙ্কায় বাস কর্মীরা
×
Comments :0