দীপশুভ্র সান্যাল (জলপাইগুড়ি) ও উৎপল মজুমদার (মালদহ)
গত তিন দিন পরপর বৃষ্টির পর আজ রবিবারও সকাল থেকে একটানা বৃষ্টি জলপাইগুড়ি জেলা জুড়ে। জলঢাকা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় আজও রয়েছে লাল সর্তকতা। জলঢাকায় সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সর্তকতার পাশাপাশি তিস্তার দোমহানী অসংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সতর্কতা রয়েছে।
মালদহের রতুয়ায় একাধিক এলাকায় ভাঙন বিপজ্জনক চেহারা নিয়েছে। কয়েকশো পরিবারকে সরে যেতে হয়েছে ঘরবাড়ি ছেড়ে।
ফুঁসছে তিস্তা, জলঢাকা, করলার মতো জেলার বিভিন্ন নদী। করলা নদীর জলে প্লাবিত জলপাইগুড়ি পৌরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে পরেশ মিত্র কলোনি সহ বেশ কিছু এলাকা।
রবিবার সকাল ৬ টায় জলপাইগুড়ি গজলডোবা ব্যারেজ থেকে ২২০৪.৫১ কিউমেক জল ছাড়া হয়েছে বলে জলপাইগুড়ি সেচ দপ্তরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছ। শনিবার রাত থেকেই অশনি সঙ্কেত দেখতে পেয়েছিলেন জলপাইগুড়ি শহরের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র দিনবাজারের ব্যবসায়ীরা। রাত থেকেই এখানে পাইকারি মাছ বাজার সহ অন্যান্য জায়গা জলে ভাসছে।
রবিবার সপ্তাহের মূল ব্যবসার দিন, আর এমন দিনেই কার্যত করলা নদীর জলে ডুবে রয়েছে বাজার। দীর্ঘ ৬২ বছর ধরে এই বাজারের মাছ বিক্রেতা সর্বন শাহ বলেন, বছরে দু-একদিন আমাদের এই ভোগান্তির শিকার হতে হয়, আজ মাছ বাজার নিজেই ডুবে রয়েছে।
অপরদিকে মূল বাজার করলা নদীর জলে প্লাবিত। এদিকে রবিবার দিনেই সরগরম হয় মাছ বাজার, ভিড় থাকে ক্রেতাদের আর এই দিনেই যদি দোকান করা না যায় তাহলে কি করে চলবে , অগত্যা দিন বাজারের সংলগ্ন করলা নদীর সেতুর ওপরেই মাছ নিয়ে বসেছেন মাছ বিক্রেতা জয়দেব দেবনাথরা।
গত চব্বিশ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৬৬.৭০ মিলিমিটার, মালবাজার ১৯৭. ৫০ মিলিমিটার, আলিপুরদুয়ার ৩১.৬০ মিলিমিটার, শিলিগুড়ি ৭৩.৪০ মিলিমিটার।
এ বছর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বেশ কিছুদিন থেকে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টি হয়েছে। মালদহের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ফুলহার ও কোশি নদীর জলস্তরও দ্রুত বেড়ে চলেছে। যার ফলে রতুয়া-১ ব্লকের মহানন্দাটোলা ও বিলাইমারি অঞ্চলে নদী ভাঙন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার খাসমহল ও ভাসারামটোলার জীবনে নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়।
কয়েকশো পরিবারকে জীবন ও সম্পত্তি বাঁচাতে বাড়িঘর ভেঙে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে চলে যেতে হচ্ছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকারকে ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না।
রবিবার রতুয়া-১ ব্লকের বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত খাসমহল ও ভাসারামটোলার বাসিন্দাদের দুর্দশা ও তাদের দুর্দশা মেটাতে মেটাতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও ত্রাণের দাবিতে রতুয়া-১ ব্লকের বিডিও-র সঙ্গে দেখা করেন বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। প্রতিনিধি দলে ছিলেন মোস্তাক আলম, জহুর আলম, সুশান্ত সিংহ, নজরুল ইসলাম, আরিফিন, শুভেন্দু স্বর্ণকার প্রমুখ। বন্যা ও নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় প্রতিনিধিদল।
Comments :0