26 November Howrah

২৬'শের ডাক, হাওড়া ময়দান দখল শ্রমজীবীদের

জেলা

হাওড়া ময়দানে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ও কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন সমূহ আহুত সমাবেশে বলছেন কৃষক নেতা পরেশ‌ পাল।

কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে মোদী সরকার। আবার শ্রমিকদের ওপর নির্মম শোষণের জন্য দানবিক ৪টি শ্রম কোড এনেছে। এরাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলেও গরিব শ্রমজীবী মানুষের রুটি-রুজি বিপন্ন। বামপন্থীরাই গরিব খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে।  শ্রমজীবী-কৃষিজীবী খেটে খাওয়া মানুষকে কেন্দ্র ও রাজ্য দুই সরকারের দানবিক নীতির বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে। মঙ্গলবার হাওড়া ময়দানে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ও ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের ডাকে মহতি সমাবেশে কথাগুলি বলেন নেতৃবৃন্দ।

হাওড়া ময়দানের সমাবেশে এসে সামিল হলেন জেলার শ্রমজীবী-মজদুর ও কৃষিজীবী মানুষ। সমাবেশ থেকে মোদি সরকারের দানবিক ৪ টি শ্রম কোড বাতিল, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ক্ষেত্র রক্ষার দাবি উচ্চারিত হয়। শ্রমিকদের মাসিক বেতন ২৬ হাজার টাকার দাবিতে, কৃষি ফসলের এমএসপি আইন এবং কৃষি ঋণ মুকুবের দাবিতে সোচ্চার হয় সমাবেশ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পশ্চিমবঙ্গ প্রাদেশিক কৃষক সভার সহ সম্পাদক পরেশ পাল, সিআইটিইউ নেতা দীপক দাশগুপ্ত, সমীর সাহা, মধুমিতা ব্যানার্জি, হাওড়া জেলা কৃষক সভার জেলা সম্পাদক মহেন্দ্র রায়, সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের পক্ষে অশোক দোলুই, ১২ জুলাই কমিটির পক্ষে  বিজন মান্না। সমাবেশ পরিচালনা করেন শামসুল মিদ্দ্যে, দিলীপ গাঙ্গুলী, কার্তিক দোলুই, অসিত সাউ সহ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চাভুক্ত সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের নেতৃত্ব।

খেতমজুরদের রেগা প্রকল্পে বছরে ২০০ দিন কাজ এবং দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরীর দাবি নিয়ে কেন রাস্তায় নামতে হল তার ব্যাখ্যা দিয়ে সমাবেশে কৃষক নেতা পরেশ পাল বলেন, "রাজ্যে কাজ নেই। প্রতিদিন এরাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে কাজ খুঁজতে যেতে হচ্ছে। সাঁতরাগাছি, শালিমার, হাওড়া স্টেশনে গেলেই দেখা যায় কাজের খোঁজে দূরপাল্লার ট্রেনে ভিড় করছেন এরাজ্যের যুবকরা। আসলে তৃণমূল সরকারের শাসনকালে কেউ ভালো নেই। মোদী সরকারের শাসনকালেও শ্রমজীবী-কৃষিজীবী ও খেতমজুরদের ওপর নিয়মিত আঘাত নামছে। এদেশের বুকে সর্ববৃহৎ কৃষক আন্দোলন গড়ে উঠেছে মোদী সরকারের আমলেই। কর্পোরেট মালিকের স্বার্থে কৃষকদের ওপর মোদী সরকার সর্বনাশা কৃষি আইন চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। কৃষকদের লড়াইয়ের ফলে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার"।

শ্রমিক নেতা দীপক দাশগুপ্ত বলেন, "শ্রমিকদের ওপর নির্মমভাবে শোষণ বাড়ছে। শ্রমজীবী মানুষের জন্য মোদি সরকার কিংবা এরাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ভূমিকা নিচ্ছে না। শহরের শ্রমজীবী মানুষ যেমন যন্ত্রনায় আছেন, গ্রামের শ্রমজীবী মানুষেরও যন্ত্রনা বাড়ছে। একটা সমাবেশ বা সভা শুধু নয়, গ্রাম-গঞ্জের ক্ষোভকে একত্রিত করে লড়াই গড়ে তুলতে হবে"।

এদিনের সমাবেশ থেকে মহেন্দ্র রায়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুর সংগঠন গুলির দাবি পত্র পেশ করা হয় জেলাশাসকের কাছে। ডেপুটেশনের পর মহেন্দ্র রায় বলেন, "বিভিন্ন দাবির সঙ্গে আবাস যোজনায় দুর্নীতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। যাতে আবাস যোজনার ঘর গরিব মানুষ পান তা সঠিকভাবে‌ যাচাই ও মূল্যায়ন করতে ভূমিকা নিতে হবে প্রশাসনকে। প্রাপকদের তালিকা জনসমক্ষে দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে"।
 

 

Comments :0

Login to leave a comment