Dumdum slum ablaze

আগুনে সব শেষ দমদমের বস্তির, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে বাম প্রার্থী

কলকাতা

 বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল প্রায় ৫০টি ঘর। আশ্রয়হীন হয়ে পড়লেন বস্তিবাসীরা। শনিবার এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দমদম ছাতাকলে। সঙ্গে সঙ্গে দমকলে খবর দেওয়া হলেও দমকলের গাড়ি দেরিতে পৌঁছানোয় ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। পুলিশ ও দমকলের প্রাথমিক অনুমান, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগের তির প্রোমোটার চক্রের দিকে। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, এই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের অনেক দিন ধরেই উচ্ছেদের চক্রান্ত করছিল একটি প্রোমোটার চক্র। এদিন প্রচার চলাকালীন দমদম লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচি বন্ধ করে সবার আগে ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
দমদম ছাতাকলের বৃহত্তর মেলাবাগান সংলগ্ন বস্তিতে শনিবার দুপুরে যখন এই আগুন লাগে, তখন বাসিন্দাদের অনেকেরই দুপুরের খাওয়াদাওয়া হয়নি। অঞ্চলটি রাজারহাট-গোপালপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। এলাকাটি ক্যাচরাপট্টি বলে পরিচিত। বস্তির বাসিন্দাদের পাশাপাশি সেখানে একটি বড় খাটালের বিরাট সংখ্যক গবাদি পশুও অসহায় অবস্থার শিকার হয়। একে তো দমকল দেরিতে পৌঁছায়, তার উপর সেখানে সঙ্কীর্ণ পথের কারণে দমকলের ইঞ্জিন ঢোকার সমস্যা হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাশের বাগজোলা খাল থেকে পাইপ দিয়ে জল টানার ব্যবস্থা করতে হয় দমকল কর্মীদের। দমকল পৌঁছানোর আগেই অবশ্য আশপাশের মানুষজনকে আগুন নেভাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা যায়। 
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ক্রমাগত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আওয়াজ হয় অগ্নিকাণ্ডের সময়ে। প্রাণ বাঁচাতে মানুষ থেকে গবাদি পশু সবাইকেই একসঙ্গে বাগজোলা খালে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বস্তির বাসিন্দাদের বড় অংশই দিনমজুর, রিকশা বা ভ্যান চালক। অনেকে ব্যবহৃত কাগজ, প্লাস্টিক ইত্যাদি কুড়িয়ে থাকেন, রয়েছেন গৃহসহায়িকাও। শনিবার বিকাল পর্যন্ত প্রাণহানির কোনও খবর নেই। আগুন লাগার পর ঘটনাস্থলে দমকলের ৮টি ইঞ্জিন যায়।
আগুন লাগার সময়ে রাজারহাটের দেবেন্দ্র কলোনিতে প্রচার চলছিল দমদম লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর সমর্থনে। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচি বন্ধ ঘটনাস্থলে চলে আসেন তিনি। দমকল মন্ত্রী এবং আধিকারিকরা পরে সেখানে পৌঁছান। সুজন চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে উদ্ধার কাজ চালানোটাই এই মুহূর্তে জরুরি। এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ পরে খোঁজা যাবে। সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে ছিলেন দেবশঙ্কর রায়চৌধুরি, শুভজিৎ দাশগুপ্ত, গোপা দাশ শর্মা সহ পার্টির অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা। 
পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির জেলা সম্পাদক ঝন্টু মজুমদার এই অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে দাবি করেছেন, অবিলম্বে আহতদের চিকিৎসা ও আচ্ছাদন-হারাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে, প্রয়োজনীয় ত্রাণ দিতে হবে এবং পরবর্তীকালে ওই বস্তিতেই ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে আশ্রয়হীনদের। গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বস্তি উন্নয়ন সমিতির জেলা কমিটির তরফে। এদিন রাতের খবর, শিশু সহ কয়েক জন বস্তিবাসী নিখোঁজ। প্রশাসনের কাছে মহিলারা একথা জানিয়ে সবাইকে খুঁজে বের করার অনুরোধ জানিয়েছেন। 
 

Comments :0

Login to leave a comment