Rajasthan polls

রামমন্দির পর্যটন নয়, কৃষকের দাবি তুলেই ফের লাল ঝড়ের অপেক্ষায় ভদ্রা

জাতীয়

 রাজস্থানে কৃষক আন্দোলনে সাড়া জাগিয়েছিল হনুমানগড় জেলা। দিল্লি সীমান্তে কৃষি বিল বিরোধী আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন এখানকার কৃষকরা। জেলার কৃষকদের জরুরি দাবি জল, বিদ্যুৎ ও ফসল বিমার দাবি আদায়ে তারা সক্ষম হয়েছেন অনেকটাই। সারা ভারত কিষান সভার উদ্যোগে কৃষক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সারা জেলায়। তার ছাপ পড়েছে জেলার অন্যতম বিধানসভা কেন্দ্র ভাদ্রেতে। এবারেও কেন্দ্রে নির্বাচনে লড়ছেন সিপিপিআই(এম) বিধায়ক বলওয়ান পুনিয়া। মূল লড়াই হচ্ছে বিজেপি সঙ্গে। কংগ্রেস এখানে তৃতীয় শক্তি। কৃষকরা বিজেপি’র রামমন্দির পর্যটন তোফায় আমল না দিয়ে তাদের রুটি রুজির দাবি সামনে উঠে এসেছে। তা কৃষকসভার লাগাতার কৃষক আন্দোলন প্রমাণ করেছে। দীপাবলি পেরিয়ে ফের পুনিয়ার সমর্থনে প্রচারে নেমে পড়েছেন কৃষকরা। সোমবার প্রচারের প্রায় শেষ দিনে ভদ্রার সমাবেশে কৃষকদের ঢল নেমেছিল। আগামী ২৫ নভেম্বর রাজস্থানের নির্বাচন। ভদ্রা কেন্দ্রের ৮০ শতাংশ হলেন কৃষক। দেশ জোড়া কৃষক আন্দোলন নাড়া দিয়ে গেছে এই গ্রাম ঘেরা কেন্দ্রে।
রাজ্যে হনুমানগড়ের ভাদ্রে কেন্দ্রে কংগ্রেস পরে বিজেপি’র দুর্গে ফাটল ধরিয়ে কৃষকের ঘরের যোদ্ধা বলে এখন পরিচিত বিধায়ক বলওয়ান পুনিয়া। এসএফআই নেতা থেকে সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে পড়া । পুনিয়া বিধায়ক হয়ে কাজের কথা উঠতেই তার সহকর্মীরা জানালেন, রাজস্থানের রাজনীতিতে বিধায়কদের সংস্কৃতি অনেকটা পালটে দিয়েছেন পুনিয়া। প্রতিটি পরিবারে বিধায়ক পুনিয়ার প্রায় যোগাযোগ থাকে বছর ভর। নয়তো প্রতি নির্বাচনে তার  ভোট বাড়ে? সিপিআই(এম)কর্মীরা জানালেন, আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা সওপত সিংয়ের কৃষক আন্দোলনের থেকে তার রাজনীতিতে প্রবেশ।জেলায় ২০০৬সালে যে বিশাল কৃষক বিক্ষোভ আন্দোলন চলে তাতে যুক্ত থাকায় তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ছয়মাস তাঁকে কারাবাসে থাকতে হয়। সেই বছরেই জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি সিপিআই(এম)প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে তিনি প্রথম বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআই(এম) প্রার্থী হন এবং ১৪ হাজার ভোট পান। ২০১৩ সালে ফের  বিধানসভা নির্বাচনে তার প্রাপ্ত ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ হাজার। তিনি ভোটে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। ২০১৮ সালে নির্বাচনে তার ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩ হাজার। তিনি বিজেপি প্রার্থী সঞ্জীব বানিওয়ালকে ২২হাজার ৫০০ ভোটে পরাজিত করেন। কংগ্রেস সেখানে তৃতীয় স্থানে চলে যায়। প্রসঙ্গত কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত ছিল এই ভাদ্রে বিধানসভা। সঞ্জীব বানিওয়ালা ১৯৯৮ সালে কংগ্রেসে বিধায়ক ছিলেন। ২০২৩ সালে বানিওয়াল বিজেপিতে যোগ দেন এবং কেন্দ্রের প্রার্থী হন। ভাদ্রে কেন্দ্র কংগ্রেসের পর বিজেপি’র গড় বলে পরিচিত হলেও সেই গড় ‌আর রক্ষা হয়নি। সেখানে প্রতি নির্বাচনেই সমর্থন বাড়ছে বামপন্থী কৃষক আন্দোলনের।
সিপিআই(এম)’র জেলা অফিস কিষান ভবনে পুনিয়ার প্রচারের দায়িত্বে থাকা সিপিআই(এম) কাউন্সিলর গুলাব খান জানালেন, পুনিয়া বিধায়ক হওয়ার পর তার উদ্যোগে কেন্দ্রে চারটি নতুন কলেজ ও প্রচুর স্কুল হয়েছে। মাত্র ৩০ শয্যার একটি উপ জেলা হাসপাতালকে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি বড় হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। গ্রামে গ্রামে আরও অনেক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ৩৩০ কিমি নতুন গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। কৃষকদের ফসল বিমা উপলব্ধ চারগুণ বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করা হয়েছে। এই কেন্দ্রে আটটি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে এসএফআই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতেছে। জেলার মোট ২৭টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১৭টিতে সিপিআই(এম) সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতেছে। জেলা পরিষদের পাঁচটি আসনের মধ্যে দুটি আসনে জিতেছে সিপিআই(এম)।
 

Comments :0

Login to leave a comment