SC RAMDEV ADVERTISEMENT

রামদেবের ভুয়ো বিজ্ঞাপনে নিষেধাজ্ঞা সুপ্রিম কোর্টের

জাতীয়

রোগ সারানোর অসত্য আশ্বাস দেয় এমন বিজ্ঞাপন বন্ধ করতে হবে এখনই। অ্যালেপ্যাথি চিকিৎসার বিপক্ষে ভুল প্রচারও বন্ধ করতে হবে। রামদেবের পতঞ্জলিকে সরাসরি এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। 

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যসোসিয়েশন (আইএমএ)’র দায়ের করা মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। দুই বিচারপতি অহসানুদ্দিন আমানুল্লা ও প্রশান্ত কুমার মিশ্র স্পষ্ট জানিয়েছেন যে অ্যালোপ্যাথির সঙ্গে আয়ুর্বেদের দ্বন্দ্ব হিসেবে এই মামলাকে দেখছেন না তাঁরা। রোগ সারানোর নামে অসত্য প্রচারকে বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে আদালত। 

দুই বিচারপতি এদিন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কেএম নটরাজনকে বলেছেন, কেন্দ্রের সরকারকেও পথ বের করতে হবে। দেখতে হবে যাতে কোনও ওষুধের বিভ্রান্তিকর প্রচার না করা হয়। 

গত বছর আইএমএ’র এই মামলাতেই পতঞ্জলিকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা। শুনানিতে তিনি বলেছিলেন, ‘‘রামদেব নিজের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রচার করতেই পারেন। কিন্তু অন্য কোনও ব্যবস্থাকে আক্রমণ করছেন কেন? তাঁর নিজের চিকিৎসা ব্যবস্থা যে কাজ করবে তার নিশ্চয়তা কোথায়? চিকিৎসকদের বক্তব্যকে তিনি খারিজ করতে পারেন না। অন্য ব্যবস্থাকে আক্রমণ করার বিষয়ে সংযত হতে হবে তাঁকে।’’ 

আইএমএ’র আবেদনে শীর্ষ আদালতে বলা হয়, ‘‘রামদেব সমানে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিকে আক্রমণ করে চলেছেন। তিনি অসত্য তথ্য প্রচার করছেন। রোগ নিরাময়ের মিথ্যা দাবি জানাচ্ছেন বিজ্ঞাপনে।’’ 

পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ চিকিৎসার নামে ‘বাবা’ রামদেবের ছবি ছেপে পত্রিকায় এবং টিভি চ্যানেলে বহু বিজ্ঞাপন নিয়মিত দিয়েছে। করোনার সময়ে এমনই বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছিল যে তাদের ওষুধে ওই রোগও সেরে যায়। ২০২২ সালের ১০ জুলাই একটি বিজ্ঞাপনকে আদালতে পেশ করে আইএমএ। আধুনিক চিকিৎসা ঘিরে বিভ্রান্তিকর প্রচারের অভিযোগ জানানো হয়। অ্যালোপ্যাথিকে ‘নির্বোধ ও দেউলিয়া’ বিজ্ঞান বলেও আক্রমণ করেছেন রামদেব। নিজের পণ্যের প্রসারের জন্য রোগ সারিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পতঞ্জলি। কিন্তু তার বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা না থাকার বিষয়ে সরব হয়েছেন দেশের বিজ্ঞানকর্মীরাও। ‘ড্রাগস অ্যান্ড আদার ম্যাজিক রেমেডিস অ্যাক্ট, ১৯৫৪’ এবং ক্রেতা সুরক্ষা আইনের বিভিন্ন ধারার উল্লেখ করে আইএমএ।

‘ড্রাগস অ্যান্ড আদার ম্যাজিক রেমেডিজ অ্যাক্ট’ অনুযায়ী রোগ সারানোর ভুয়ো প্রচার বা বুজরুকি আইনের চোখে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। 

মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, যে যে পণ্যে অসত্য প্রচার করে বিজ্ঞাপন ছাপা হবে তার প্রতিটিতে ১ কোটি টাকা করে জরিমানা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে এমন প্রচারও করা যাবে না। 

বিভিন্ন অংশই মনে করাচ্ছেন যে আয়ুর্বেদ বা যোগ নিয়ে ভারতে চর্চা দীর্ঘদিনের। কিন্তু রামদেবকে এই পুরো ক্ষেত্রে একচেটিয়া ব্যবসার একমাত্র মুখ করেছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার। তার ওপর সরকারি পদে বসে বিজ্ঞানচর্চার বিমুখে সমানে বিবৃতিতে এই সব প্রচার জমি পেয়ে যাচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment