Ed Sandeshkhali

শাহজাহানের ডেরা থেকে খালি হাতেই ফিরতে হলো ইডিকে

রাজ্য

 


প্রবীর দাস- সন্দেশখালি

বুধবার সকালে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ার বেতাজ বাদশা শাহজাহান শেখের বাড়ি ঘিরে ফেলে ইডি। দুটি তালা ভেঙে পুলিশের দুজন সাধারণ সাক্ষী দুজন, ভিডিও ফটোগ্রাফার ইডি আধিকারীক সহ মোট ১৩ জন বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। ১২৫ জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান নিয়ে হাজির হন ইডি'র আধিকারিকরা। ১৯ দিনের মাথায় এসে ৩ ঘন্টা তল্লাশি চালিয়ে কার্যত খালি হাতে ফিরতে হলো ইডি আধিকারীকদের। ঘরে কাপড় চোপড় বাসনপত্র ছাড়া কিছুই নেই। ফাঁকা আলমারি ফাঁকা সুটকেস ঘরে। মেলে নি কোন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তবে কী শাজাহান গুরুত্বপূর্ণ নথি সহ এখনও বেপাত্তা? যে আশঙ্কা আগেই উঠেছিল।

গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতিতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে শেখ শাহাজাহানের বাড়িতে গিয়েছিলেন ইডি। সেখানে গিয়ে শেখ শাহাজাহানের সঙ্গে কথা বলা তো দূর পাল্টা তার শাগরেদদের হাতে প্রহত হতে হয়েছিল ইডি আধিকারিক সহ নিরাপত্তা কর্মীদের।

ঠিক সেই ঘটনার ১৯ দিনের মাথায় ফের সন্দেশখালিতে

অভিযান ইডির। একেবারে কোমর বেঁধে অনেক বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে শেখ শাহজাহানের বাড়ি ঘিরে ফেলে । সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় চাবি খোলার চাবিওয়ালাকে। পুলিশ বাধা দেয় তল্লাশিতে। সার্চ ওয়ারেন্ট দেখতে চায় ইডি আধিকারীকদের কাছে। সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে সামান্য তর্ক বিতর্কের পর তল্লাশিতে যাওয়ার বাধা অতিক্রম করে ঠিক হয় দুজন ব্যক্তির উপস্থিতিতে তল্লাশি হবে।

এদিন সকাল সাতটা ৩৯ মিনিট নাগাদ দুটি তালা ভেঙে পুলিশের দুজন সাধারণ সাক্ষী দুজন, ভিডিও ফটোগ্রাফার ইডি আধিকারীক সহ মোট ১৩ জন বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। জানা গেছে তিনটি তালা ভেঙে বাড়ির ভিতরে ঢোকে ইডি আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান শাহজাহানের বাড়ি ঘিরে ফেলেন। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন ভিডিও গ্রাফারকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় নি ইডির পক্ষ থেকে। দোতলার ঘর গুলিতে তল্লাশি চালিয়েছে। অধিকাংশ আলমারির চাবি খুঁজে না পাওয়ায় ডুপ্লিকেট চাবি তৈরির কাজ চলে। শেখ শাহজাহান এখনও পলাতক।

গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি কান্ডে সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে এই সাতসকালেই যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি আধিকারীকরা। শাহজাহানের কোবরা বাহিনীর হাতে আক্রান্ত রক্তাক্ত হয় ইডি আধিকারীক ও সংবাদমাধ্যম। শেখ শাহজাহান সহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারি নিয়ে নাটকের যবনিকাপাত শেষ হতে না হতেই ফের এদিন হানা ইডির। মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষে কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইকে নিয়ে সিট গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত। তাতেও তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ইডি। ফের তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মামলা গ্রহনের অনুমতি দেয়। বুধবার এই মামলার শুনানি হতে পারে। এদিন শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করে কিছু খালি ব্রিফকেস পাওয়া গেছে। শেখ শাহজাহানের বাড়ি তল্লাশির পর পাশেই শাহজাহানের মেজভাই শেখ সিরাজুদ্দিনের বাড়িতে যায় ইডি'র আধিকারিকরা। সেখান থেকে ফিরে ফের শাহজাহানের বাড়িতে ঢোকে। এরপর ইটভাটা সহ অন্যত্র তল্লাশিতে যেতে পারে এমনটাই খবর ইডি সূত্রে। আদালতের নির্দেশে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে লাগানো সিসিটিভি ইতিমধ্যেই ফুটেজ ইডি আধিকারীকরা সংগ্রহ করছে বলে জানতে পারা গেছে।

শাহজাহানের আলমারি থেকে মিলেছে কিছু জামা কাপড়। তবে নথি কিন্তু কিছু পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন, শেখ শাহাজাহান পালিয়ে যাওয়ার আগে সমস্ত নথি নিয়ে গিয়েছেন।

এদিন বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। তল্লাশি শেষে বাকি দায়িত্ব নেবে ইডি। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো তদন্তে পুলিশ ন্যাজাট থানার পুলিশ যুক্ত হতে পারবে না।ইডি ন্যাজাট থানাকে বাড়ির চাবি পুলিশকে দিতে চাইলে পুলিশ তা নিতে অস্বীকার করে। এখন দেখার চাবির দায়িত্ব ইডি নিজে নেয় না কি বিশ্বস্ত কাউকে দেয়। খবর ইডি সূত্রে।

Comments :0

Login to leave a comment