CPIM RALLY IN PURULIA

প্রতিবাদী মহিলাদের জেল, ধিক্কার সমাবেশ পুরুলিয়ায়

রাজ্য

ভাস্কর দাশগুপ্ত- পুরুলিয়া

জয়পুরের আঘরপুরের মহিলাদের কী অপরাধ ছিল যে তাঁদের ১৬ দিন কোলে শিশু নিয়ে জেলে কাটাতে হলো? তারা কেবল নিজেদের এলাকায় জমি লুটের প্রতিবাদ করেছিলেন। 
বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় সমাবেশে এই প্রশ্ন তুলেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিনই সিপিআই(এম)’র ডাকে হয়েছে মিছিল। ১৪ দফা দাবিতে জেলাশাসক এবং ৬ দফা দাবিতে পুলিশ সুপারকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। 
আঘরপুরে শিল্পের নামে জমি কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা। প্রশ্ন তুলেছেন মহিলারা। কেবল তার জন্য ১৬ দিন শিশুদের নিয়ে জেলে থাকতে হয়েছে তাঁদের। 
সেলিম তৃণমূল কংগ্রেসকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘‘এরা এখন মাটি, জমি, বালি পাথর লুট করছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘শিল্পের দোহাই দিয়ে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করা যাবে না। 
এদিন পুরুলিয়া স্টেশন থেকে বিশাল মিছিল গোটা শহর ঘুরে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে সমবেত হয়। মিছিলে ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সহ  নেতৃবৃন্দ। জনসভায় বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) সেলিম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র, দেবলীনা হেমব্রম, রাজ্য কমিটির সদস্য সুদীপ সেনগুপ্ত সহ নেতৃবৃন্দ। সভাপতিত্ব করেন জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়। 


 

সিপিআই(এম)’র দাবি, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাদ জেলার লক্ষাধিক শ্রমজীবীকে তালিকায় যুক্ত করতে হবে। কাজ চালু করে বকেয়া মজুরি দিতে হবে।  আদিবাসী হস্টেল চালু,  হাসপাতালে চিকিৎসার। 
সেলিম বলেন, ‘‘ শিল্প সম্মেলন মানেই ভাঁওতা। গত ১২ বছর ধরে রাজ্যের মানুষ এই ভাঁওতা দেখছেন। কী শিল্প হচ্ছে, কোন শিল্পপতি কারখানা করছেন, কত বিনিয়োগ হচ্ছে তা সরকার সাহস থাকলে প্রকাশ করুক।’’
তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে চোরের পিসির বড় গলা। লুটের টাকার ভাগ সবাই পেয়েছে। আর এই লুটের প্রতিবাদ করতে গেলে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে, অভিযোগ এনে মামলা করা হয়। গোটা দেশে গণতন্ত্র নেই। মানুষের হকের কথা বললে জেলে পোরা হচ্ছে। লুটের সাম্রাজ্য চলছে।’’ 


প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সেলিম বলেন, ‘‘দুজনেরই লুটের রাজত্ব। আর আমরা বলি কাজের কথা। ওরা বলে কর্মচ্যুতির কথা।’’ 
অমিয় পাত্র বলেন, ‘‘শিক্ষকের চাকরি চুরি, ১০০ দিনের কাজ চুরি, ১০০ দিন শ্রমিকের মজুরি চুরি চলছে। দুর্নীতির থেকে মুক্ত করতেই হবে রাজ্যকে। ধান কেনাতেও চুরি। যার জমি নেই তার কাছ থেকে নাকি ধান কেনা হয়েছে। আবার যে কোনদিন চাষ করেনি তার কাছ থেকেও ধান কেনা হয়েছে।’’ দেবলীনা হেমব্রম বলেন, ‘‘জল জঙ্গলের অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে। এ রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। অথচ রাজ্যে মহিলারাই সুরক্ষিত নয়। সর্বত্র ভাঁওতার রাজনীতি। শিক্ষিত ছেলেরা দিনের পর দিন রাস্তায় বসে আছি। কারণ চাকরি চুরি হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে যুবদের ইনসাফ যাত্রা। সুদীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ওরা মানুষের ঘর থেকে আলো নেভাতে চায়। আমরা মানুষের ঘরে আলো পৌঁছাতে চাই। লাল ঝাণ্ডা শূন্য হওয়া মানেই গরিবের কন্ঠরোধ করা।’’ 
৭ জানুয়ারি ব্রিগেড সফল করার ডাক দেন বক্তারা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিলাসী বালা সহিস। সমাবেশ মঞ্চে এসএফআই ইনসাফ যাত্রার জন্য অর্থ সাহায্য তুলে দেয়।

Comments :0

Login to leave a comment