বিশ্বের সবচেয়ে পাঁচ ধনীর সম্পদ দ্বিগুন হয়েছে। আর নিচের তলায় ৫০০ কোটির আয় কমেছে। ব্রিটেনের অক্সফ্যাম’র রিপোর্টে বিশ্বময় বৈষম্যের এই চেহারা ধরা পড়েছে ফের।
রিপোর্ট দেখিয়েছে মহামারীর পরও বৈষম্যের একমুখী প্রবণতা বিন্দুমাত্র কমেনি। মহামারীর সময়েও অক্সফ্যামের রিপোর্ট দেখিয়েছিল ভারত সহ বিশ্বে মারাত্মক চেহারা নিচ্ছে বৈষম্য। অল্প কয়েকজনের সম্পদ বাড়ছে বিপুল জনসমষ্টিকে নিঃস্ব করে।
বিশ্বে সবচেয়ে ধনী এলন মাস্ক, বার্নার্ড আরনল্ড, জেফ বেজোস, ল্যারি এলিসন এবং মার্ক জুকেরবার্গের মিলিত সম্পদ ৪৬৪ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। ২০২০’র পর থেকে এই পাঁচজনের সম্পদবৃদ্ধির হার ১১৪ শতাংশ, মানে দ্বিগুনের বেশি। এই পাঁচ ধনীর মোট সম্পদ হয়েছে ৮৬৯ বিলিয়ন ডলার। এক বিলিয়ন মানে ১০০ কোটি। এক বিলিয়ন ডলার মানে প্রায় ৮ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা।
কেবল ধনী ব্যক্তি নয়, বিশ্বময় দাপিয়ে বেড়ানো কর্পোরেট সংস্থাগুলির আয়ও বাড়ছে লাফিয়ে। ওপরের সারির ১৪৮টি কর্পোরেটের মুনাফা হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি ডলার। তিন বছরের গড়ে বৃদ্ধির হার ৫২ শতাংশ।
বিপুল শ্রমশক্তিকে বিপন্ন করেই কর্পোরেট এবং সেগুলির মালিকদের এমন বিপুল আয়। বিভিন্ন সমীক্ষাতেই তা বারেবারেই ধরাও পড়েছে। যেমন আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন উদ্বেগ জানিয়েছে অত্যন্ত কম মজুরির বিপজ্জনক পেশা বেড়ে চলায়। বিপুল অংশের মানুষ, বিশেষ করে যুবরা, অন্য কোনও উপায় না থাকায় এমন পেশাই বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছেন। এমনকি মজুরি ও বেতনের বিচারের খানিক ওপের অংশে তাকা শ্রমজীবীকেও নিয়মিত কাজ খোয়াতে হচ্ছে।
শ্রমিক সুরক্ষা বিধি ভাঙার অভিযোগ রয়েছে এলন মাস্কের ‘স্পেস এক্স’-র বিরুদ্ধে। আর জেফ বেজোসের আমাজন হোম ডেলিভারিতে যুক্ত করে রেখেছে যে ‘গিগ’ শ্রমিকদের, তাঁদের আরও কঠিন শর্ত মেনে কাজ করতে হচ্ছে।
অক্সফামের এক্সটিকিউটিভ ডিরেক্টর অমিতাভ বেহর বলেছেন, ‘‘বিশ্বজুড়ে ধনবৈষম্য মোটেই আশ্চর্যজনক নয়। বিলিওনেয়ার এবং কর্পোরেট মালিকরা তাঁদের মুনাফা নিশ্চিত করছেন বিশ্বময় আর সকলের সঙ্কটকে নিশ্চিত করে।’’
এবারের রিপোর্টেও অক্সফ্যাম সওয়াল করেছে কর্পোরেটের দাপট নিয়ন্ত্রণে সরকারি পদক্ষেপের। কর্পোরেট কর বসানোর পক্ষেও সওয়াল করেছে ফের। বিভিন্ন সরকার যদিও উলটোপথেই হাঁটছে। ভারতে কর্পোরেট কর তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। গৌতম আদানির মতো কর্পোরেট মালিকদের একচেটিয়া ক্ষমতা আরও বাড়ানোর ব্যবস্থা করেছে কৃষিপণ্য থেকে বিমানবন্দর, সব ব্যবসা হাতে তুলে দিয়ে।
Comments :0