ফের ভারতীয় ইতিহাসের ওপর এনসিআরটির। ষষ্ট শ্রেণির সমাজ বিজ্ঞানের যেই বই প্রকাশ করা হয়েছে এই কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষ থেকে তাতে বদলে দেওয়া হয়েছে হরপ্পা মহেঞ্জদারো সভ্যতার নাম। লেখা হয়েছে সিন্ধু সরস্বতী সভ্যতা। এনসিআরটি যেই বই প্রকাশ করেছে তাতে উল্লেখ রয়েছে বেদের কথা।
বইতে বলা হয়েছে ইতিহাসবীদরা ভারতের এই প্রাচীন সভ্যতাকে বিভিন্ন নামে বর্ননা করেছেন। কিন্তু তারা এই সভ্যতাকে সিন্ধু সরস্বতী সভ্যতা বলেই উল্লেখ করবেন। উল্লেখ্য নয়া শিক্ষা নীতির অংশ হিসাবে এই এনসিআরটিকে চালু করেছে মোদী সরকার। শিক্ষায় আরএসএসসের প্রভাব বিস্তার করার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক বলেন, ‘‘ভারতের এই প্রাচীন সভ্যতাকে অনেক নামে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ঠিকই। রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়ের আবিস্কৃত এই সভ্যতা সব সময় আমাদের কাছে হরপ্পা মজেঞ্জদারো সভ্যতা নামেই বেশি পরিচিত হয়েছে। কেন নাম বদলে দেওয়া হলো তা বোঝা যাচ্ছে না।’’
এনসিআরটিকে ব্যবহার করে সিলেবাসে একাধিক বদল এনেছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বাদ দেওয়া হয়েছে ডারউইনের তত্ত্ব, বদলে আনা হয়েছে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০’তে বলা হয়েছে, আঞ্চলিক ইতিহাস পড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু বিজেপি সরকারের শিক্ষানীতিতে এই আঞ্চলিক ইতিহাসকে কেন্দ্র করে শিশুদের বোঝানো হচ্ছে যে পুরান আর ইতিহাসের মধ্যে কোনও ফারাক নেই।
বৈদিক যুগকে শ্রেষ্ঠ যুগ বলা হচ্ছে। বৈদিক সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল বর্ণাশ্রম। বিভিন্ন বর্ণের মধ্যে ভাগ। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্রের মধ্যে সব থেকে বেশি অত্যাচার লাঞ্ছনার মুখোমুখি হতে হয়েছে শূদ্রদের।
শুধু এখানেই শেষ নয় স্বাধীনতা আন্দোলনে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকাকে খাটো করে দেখানোর প্রবণতা প্রথম থেকেই রয়েছে এই সরকারের। আর তাই বিভিন্ন রাজ্যের পাঠ্য বইতে জায়গা পায় না ব্রিটিশ বিরোধী ‘মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা’। আর এবার বদলে ফেলা হলো হরপ্পা মহেঞ্জদারো সভ্যতার নাম।
NCERT
হরপ্পা মহেঞ্জদারো সভ্যতার নাম বদলে দিল এনসিআরটি
×
Comments :0