Weather

মরশুমের শীতলতম দিন আজ, ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস

রাজ্য

গোটা রাজ্যে জাঁকিয়ে শীত। গত ৪৮ ঘণ্টায় পারদ নেমেছে ৫ ডিগ্রি। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩ ডিগ্রি কম। কলকাতায় শনিবার তাপমাত্রা ১২.৮ ডিগ্রি। জেলায়জেলায় পারদ ৮১০ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। পারদ নেমেছে উত্তরবঙ্গেও।  কলকাতায় মরশুমের শীতলতম দিন আজ। জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। দল্লির তামাত্রা আজ ৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  হাড়কাঁপানো শীত চলছে উত্তর ভারত জুড়ে।শীতের পরশ থাকবে সোমবার পর্যন্ত। হাতে গোনা তিন দিনের মধ্যে পারদ কমার রেকর্ডের চেষ্টা চলবে। কিন্তু মাঘ পড়তেই ফের বৃষ্টির আশঙ্কা। আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় হতে পারে বৃষ্টি। শুক্রবার সবে কমেছে তাপমাত্রা। মরশুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ। আর জাঁকিয়ে শীত পড়া নিয়ে বাঙালি যখন হুলুস্থুল, তখন ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস। বৃষ্টির প্রকোপের জেরে মাঠের ফসল কাটার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়া দপ্তর। মঙ্গলবারের আগে মাঠের ফসল কেটে ঘরে তুলে ফেলার কথা বলা হয়েছে। আর তাতেই ফের মাথায় হাত চাষিভাইদের।
দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হলেই শীতের পথে বাধা তৈরি হবে। ফের শীতের আশায় হন্যে হয়ে বসে থাকতে হবে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, পশ্চিম হিমালয় থেকে ঝঞ্ঝা আর বঙ্গোপসাগর থেকে আর্দ্রতা ঢোকার জেরেই আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায় বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরে হালকা বৃষ্টি দিয়ে শুরু হবে ১৬ জানুয়ারি, মঙ্গলবারের বৃষ্টি। পরদিন সেই বৃষ্টি উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, নদীয়া, হাওড়া, হুগলী, এমনকি কলকাতাকে ছুঁয়ে ফেলবে। সেদিন হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে।  
দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাতেও হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বিশেষত আগামী বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারি হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায়। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিঙ, কালিম্পঙেও আগামী মঙ্গলবার বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিঙ, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং কালিম্পঙ জেলায়। এমনিতে জানুয়ারি মাসে চেনা শীতের দেখা মেলেনি। শীতের চলতি মরশুম প্রথম থেকেই খরা। তাপমাত্রার পারদ ঘোরাফেরা করেছে ১৬ থেকে ১৭ ডিগ্রির আশপাশেই ঘোরাফেরা করছে।
এরই মধ্যে শুক্রবারে কলকাতার তাপমাত্রা এক ধাক্কায় তিন ডিগ্রি কমলো। আজ কলকাতায় এই মরশুমের শীতলতম দিন। ভোর থেকে সারাদিন ঠান্ডা উত্তরে হাওয়া বইতে দেখা গেছে। আর হিমেল ওই বাতাসের জন্য এই প্রথম দিনের বেলাতে ঠান্ডা অনুভব করা গেছে। সোমবার গঙ্গাসাগরে স্নান। ওই দিনই তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী দুদিন রাতের দিকে কনকনে ঠান্ডার পড়ার আশঙ্কা থাকলেও হাওয়া অফিসের বৃষ্টির পূর্বাভাস শীতের আয়ুকে অনেকটাই যেন কমিয়ে দিলো।
দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়ায় এদিন সকালে পারদ নেমেছে ৮.৪ ডিগ্রিতে। বাঁকুড়ার মতো ঠান্ডা একেবারে জবুথবু চেহারা পুরুলিয়াতে। আকাশ পরিষ্কারের সঙ্গে ঝলমলিয়ে রোদ ওঠায় ঠান্ডার কামড়টা বেশ ভালোই অনুভূত হয়েছে। তবে ঠান্ডার তীব্রতা এতটাই ছিল যে ঠাঁয় রোদে দাঁড়িয়েও ইপ্সিত উষ্ণতা মেলেনি। বাঁকুড়ায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি উঠেছিল। সন্ধ্যা হতেই তাপমাত্রা ফের নামতে শুরু করেছে। ঠান্ডার জেরে মানুষজনকে শুক্রবার বিকাল থেকে রাস্তায় আগুন পোয়াতে দেখা গেছে। বর্ধমানে এদিন পারদ নেমেছে ৯.৮ ডিগ্রিতে।
শুক্রবার কলকাতার পারদ এই মরশুমের সবচেয়ে কম। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে দাঁড়িয়েছে ১৪.১ ডিগ্রিতে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এই সময়ে গড় সর্বোচ্চ থেকে তিন ডিগ্রি নেমে হয়েছে ২২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এর মধ্যে সকাল থেকে চলছে উত্তরে হাওয়ার দাপট। কলকাতার শহরতলিতে এদিন তাপমাত্রা আরও কমতে দেখা গেছে। সকাল থেকে কলকাতার আকাশ পরিষ্কার থাকলেও বিকালের দিকে আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখা গেছে। আগামীকালও তাপমাত্রা কম থাকবে বলে ধারণা করছে হাওয়া অফিস।
অন্যদিকে, শিলিগুড়িসহ উত্তরবঙ্গে শুক্রবার কড়া শীতের প্রকোপ দেখা গেছে। কয়েকদিন ধরেই উত্তরবঙ্গে পারদ নামতে থাকায় পর্যটকের সংখ্যাও বেড়েছে। সকলের আশা যদি দার্জিলিঙের তুষারপাত। তাই ঠান্ডাকে তুড়ি মেড়ে উড়িয়ে শুক্রবারেও প্রচুর পর্যটককে দার্জিলিঙ ও সিকিমের দিকে যেতে দেখা গেছে। শিলিগুড়ি শহরে এদিন অবশ্য সূর্যের দেখা মেলেনি। সকাল থেকে ঘন কুয়াশা গ্রাস করেছে শিলিগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকা। কুয়াশার জেরে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় পর্যটকদের নিয়ে গাড়ি চালকরা দারুণ সমস্যার মধ্যে পড়েন। শীতের কামড়ে এদিন এলাকার সাধারণ মানুষকে খুব একটা রাস্তায় দেখা যায়নি। বিকাল হতেই শুনশান রাস্তা।

Comments :0

Login to leave a comment