আবগারি মামলায় গ্রেপ্তার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ’র জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করল ইডি।
রাত এগারোটা নাগাদ কেজরিওয়ালকে নিয়ে নিজেদের দপ্তর অভিমুখে রওনা দেয় ইডি। কেজরিওয়ালের সরকারি বাসভবনের সামনে তখন আম আদমি পার্টির সমর্থকদের বিশাল জমায়েত। যোগ দেন দিল্লির কংগ্রেস নেতারা।
দিল্লি পুলিশ ভিড় সরিয়ে দিতে থাকে।
কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারি ঘোষণার পরই আপ নেত্রী অতসী জানিয়ে দেন যে কেজরিওয়াল পদত্যাগ করছেন না। জেল থেকেই সরকারি দায়িত্ব পালন করবেন।
কেজরিওয়ালকে গ্রেপতার করার কড়া নিন্দা করেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তিনি বলেছেন ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হলো। ভোটে জনতার কাছে খারিজ হওয়ার ভয় পাচ্ছে বিজেপি।
ইয়েচুরি বলেছেন, এই গ্রেপ্তারি দেশের গণতন্ত্র, সংবিধানকে বাঁচানোর লড়াইয়েও আরো জমাট করবে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে গ্রেপ্তার করা হতে পারে, এদিন সকালেই দিল্লি হাই কোর্টে এই আশঙ্কা জানিয়েছিলেন আপ নেতা। ইডি আগে কেজরিওয়ালকে নয় বার ডাকলেও যাননি তিনি। দিল্লির আবগারি নীতি ঘিরে টাকা লেনদেন এবং পাচারের অভিযোগ তাঁর বিরূদ্ধে তুলেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
এর আগে হেমন্ত সরেনকে গ্রেপ্তার করে ইডি। তবে গ্রেপ্তারির আগে পদত্যাগ করেন তিনি। কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারির গুরুতর প্রভাব পড়তে চলেছে জাতীয় রাজনীতিতে। যে আবগারি নীতি ঘিরে মুখ্য অভিযোগ, আপ বারবারই বলেছে যে সেই নীতি বাতিল করা হয়েছে।দিল্লি আবগারি কেলেঙ্কারি মামলায় ইডি কেজরিওয়ালকে অষ্টম বার ডেকে সাড়া না পেয়ে নবম বার তলব করা হয় ২১ মার্চ। বৃহস্পতিবার সকালে আবগারি এবং বিকালে জল বোর্ড দুর্নীতি মামলায় তাঁকে সমন পাঠায় ইডি। শনিবারই আবগারি দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় কেজরিওয়ালকে ‘স্বস্তি’ দিয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আদালত জানিয়ে দেয়, এখনই কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না ইডি। আদালতে ‘স্বস্তি’ পাওয়ার পরই ফের ইডি’র নোটিস পায় কেজরিওয়াল। আবগারি মামলার পর তাঁকে দিল্লি জল বোর্ড মামলাতেও তলব করা হয়। আবগারি মামলা সংক্রান্ত মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে যাতে কোনও কঠোর পদক্ষেপ না করা হয়, সেজন্য হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর রক্ষাকবচ খারিজের পরেই কেজরির বাড়িতে আসেন ইডি’র তদন্তকারি আধিকারিকেরা। তাঁকে জেরা করেন ইডি তদন্তকারী অফিসারা। সেই সময় কেজরিওয়ালের সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে। প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে ইডি’র তল্লাশি অভিযান চলতে থাকে। লোকসভা ভোটের মুখে গ্রেপ্তার করা হয় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। তাঁর ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে ইডি খবর সূত্রে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল গ্রেপ্তার হলেও মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না, জেল থেকেই সরকার চালাবেন বলে দাবি করেছে আপ নেতৃত্ব।
Comments :0