তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে তল্লাশি আগে পুলিশকে জানানো হয়েছিল। জানানো হয় এমনকি বনগাঁ পুলিশ জেলার এসপি-কেও। কিন্তু তারপরও আক্রান্ত হতে হয়েছে ইডি আধিকারিক এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের।
সোমবার এই অভিযোগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ইডি। বনগাঁ এবং সন্দেশখালিতে তল্লাশি চালায় ইডি। সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় তৃণমূলের আরেক নেতা শাহজাহান শেখের বাড়ির সামনে আক্রান্ত হন ইডি আধিকারিকরা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। শাহজাহান শেখ পলাতক। তাঁকে এখনও ধরেনি পুলিশ।
রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এদিন সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে জানিয়েছেন কড়া ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। তবে ইডি জানিয়েছে শঙ্কর এবং শাহজাহান, দু’জনের বাড়ি ঘিরে তল্লাশিতে হামলা এবং বাধাদানের অভিযোগ পুলিশে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ঘটনাতেই এফআইআর’র প্রতিলিপি পুলিশ পাঠায়নি ইডি’কে। শাহজাহান শেখের বাড়ি সংশ্লিষ্ট ন্যাজোট থানা বেশিরভাগই জামিনযোগ্য ধারা দিয়েছে।
এর আগে তৃণমূলের অভিযোগ ছিল পুলিশকে না জানিয়ে তল্লাশিতে যাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। তল্লাশির নামে প্ররোচনা তৈরি করছেন। যার জেরে অশান্তি বাঁধছে। একের পর এক দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূল এখন হামলাকে বৈধতা দিতে ‘প্ররোচনা’-র তত্ত্ব হাজির করেছে। আরেকদিকে আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমেছে ইডি। ফলে হাইকোর্টে জবাবদিহি করার দায় রয়েছে কেন্দ্রের ইডি’রও। জানা গিয়েছে, সোমবারই কলকাতায় ইডি’র দপ্তর থেকে ঘটনার রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। জাতীয় তদন্ত সংস্থা বা এনআইএ’র তদন্তের জন্য পদক্ষেপের আর্জি জানানো হতে পারে।
৫ জানুয়ারি শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে রাত সাড়ে এগারোটায় বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথমে বনগাঁ থানার পুলিশকে জানানো হয়। সকাল ৮ টা ৪৬ মিনিটে ই-মেল যায় বনগাঁ থানায়। বিকেল চারটে নাগাদ বনগাঁর এসপি-কে ফোন করা হয়। কিন্তু সুরক্ষা মেলেনি। একদল লোক জড়ো হয়ে আধিকারিকদের কাজে বাধা দিতে থাকে।
শঙ্কর আঢ্যকে শনিবার আদালতে হাজির করে ইডি। ১৪ দিন হেপাজতেও পেয়েছে বনগাঁ পৌরসভার এই প্রাক্তন প্রধানকে। অর্থ পাচার রোধ আইন বিচারের আদালতে ইডি জানিয়েছে রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমে বহু বেআইনি লেনদেনের খোঁজ মিলছে। অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও রেশনের শস্য সংগ্রহ করেছে বিভিন্ন জন। অপরাধের মাধ্যমে আদায় অর্থ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। কেবল শঙ্কর আঢ্যই ৯-১০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ ইডি’র। তার মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা গিয়েছে দুবাইয়ে।
ইডি বিবৃতিতে বলেছে, টাকা বৈদেশিক মুদ্রায় রূপান্তরের একাধিক সংস্থা চালাতেন শঙ্কর নিজেই।
শঙ্কর এবং শাহজাহানরা মন্ত্রী এবং তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অনুগামী বলেই পরিচিত। এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে জ্যোতিপ্রিয়ের লেখা চিঠির সূত্রে শঙ্করের বাড়ি জেরা হয় বলে আদালতে জানিয়েছিল ইডি।
Comments :0