ইনসাফ সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে সাতসকালে ব্রিগেডের মাঠে পৌঁছে গেলেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, কথা বললেন যুব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার সকালে ব্রিগেডের মাঠে গিয়ে সমাবেশ সংক্রান্ত বিষয়ে যুব নেতৃত্বকে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘‘বাংলার মানুষকে অসহায়তা থেকে বের করে আনতে নতুন প্রজন্ম লড়াইয়ে নেমেছে। সব অংশের মানুষকে নিয়ে আমরাও তাঁদের পাশে থাকব।’’
ব্রিগেডের মাঠেই সাংবাদিকরা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করলে সেলিম জবাবে বলেছেন,‘‘আমি কালীঘাটের কাকুকে নিয়ে চিন্তিত নই, কালীঘাটের পিসিকে নিয়ে চিন্তিত। কাকুর জন্য আদালতে এত লড়তে হলো, বিচারপতির স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করল, পিসিকে বাঁচাতে কী হবে! চোরের মায়ের বড় গলা, সেই গলার আওয়াজ কমানোর জন্য এবার উদ্যোগ নিতে হবে।’’
লুট-দুর্নীতি, মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া, সাম্প্রদায়িক বিভাজন ঘটিয়ে মানুষের ঐক্যকে ধ্বংস করার বিরুদ্ধে ডিওয়াইএফআই’র ডাকে কোচবিহার থেকে কলকাতা ৫০ দিন ধরে প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পদযাত্রা হয়েছে। রাজ্যের সর্বত্র যুবরা আওয়াজ তুলতে সক্ষম হয়েছেন হক আদায়ের দাবিতে। সেই দাবিতেই ৭ জানুয়ারি ব্রিগেডের মাঠে যৌবনের ডাকে সব বঞ্চিত ও ক্ষুব্ধ মানুষের মহা সমাবেশ হবে। মহম্মদ সেলিম এটাকেই বলেছেন, যৌবনের হাত ধরে বাংলার পুনর্জাগরণের লড়াই, বামপন্থার পুনর্জাগরণের লড়াই।
এদিন শীতের সকালে সাতটার সময়েই ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রস্তুতি দেখতে যান মহম্মদ সেলিম ও যুব নেতৃবৃন্দ। ডিওয়াইএফআই’র রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি, যুবশক্তি পত্রিকার সম্পাদক কলতান দাশগুপ্ত সহ যুব নেতৃবৃন্দ সংগঠনেরই প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের পরামর্শ নেন, কোথায় কীভাবে মঞ্চ করা হবে, মাইক লাগানো হবে— তা নিয়ে কথা বলেন। সমাবেশে যাঁরা আসবেন, তাঁদের সুবিধার জন্য কী কী পরিকল্পনা ডিওয়াইএফআই কর্মীরা নিয়েছেন, সেই সব বিষয়েও খোঁজখবর নেন সেলিম। আগামী রবিবার কোন কোন দিক থেকে মিছিল মাঠে ঢুকে ব্রিগেডকে প্লাবিত করে দেবে, ডিওয়াইএফআই নেতৃবৃন্দ তাও তাঁকে জানিয়েছেন।
এর মধ্যেই সাংবাদিকরা মহম্মদ সেলিমকে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বর পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন করলে সেলিম বলেন, ‘‘ওঁর ভয়েস স্যাম্পেল নিতে এত দেরি করল কেন ইডি-সিবিআই? রাজ্যের শাসকরা রাজ্যের পুলিশকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে, আর কেন্দ্রের শাসক দল কেন্দ্রের পুলিশকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে। হাইকোর্ট বলার পরেও এক জনের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহে এত সময় লাগলে পিসির কণ্ঠস্বর নামাতে কত সময় লাগবে? এর জন্যই ইনসাফ যাত্রার গুরুত্ব। যাঁরা কাজ পাননি, লুট-চুরি-দুর্নীতিতে যাঁরা বঞ্চিত, যাঁরা প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত অসহায় মানুষ, তাঁদের অসহায়তা দূর করতে নতুন প্রজন্ম উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা তাকে স্বাগত জানিয়েছি। বাংলাকে বাঁচাতে হলে, পুনর্জাগরণ ঘটাতে হলে বামেদের পুনর্জাগরণ দরকার। সেটা যুব প্রজন্মের হাত ধরেই হচ্ছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়েও আমরা দেখেছি, যৌবনের ঢল নেমেই পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। রাজ্য ও দেশকে আজকের দিনেও চুরি, লুট, দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির হাত থেকে রক্ষা করতে হলে যৌবনের হাত ধরে বামপন্থার পুনরুজ্জীবন ঘটাতেই হবে।’’
তৃণমূলে নবীনে-প্রবীণে দ্বন্দ্ব নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে সেলিম বলেছেন, তৃণমূলে আবার নবীন-প্রবীণ কে? কারা আছে তৃণমূলে? একদল আছে, যারা আগে বিজেপি করত। একদল বিজেপি ঘুরে ফিরে এসেছে। আরেকদল অপেক্ষায় আছে বিজেপি’তে যাওয়ার। ওদের দ্বন্দ্ব নিয়ে মিডিয়া ছাড়া কে মাথা ঘামাচ্ছে?
Insaf brigade
যুবদের হাত ধরেই পুনর্জীবনের পথে বামপন্থা, বললেন সেলিম
×
Comments :0