HEMANT SOREN JHARKHAND

মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার চম্পাই সোরেন, গ্রেপ্তার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন

জাতীয়

গুরুতর পরিস্থিতির মুখে ঝাড়খণ্ড। বুধবার সকাল থেকে চলছিল মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের জেরা। সন্ধ্যায় রাঁচিতে রাজভবনে তাঁর দল ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার বিধায়কদের নিয়ে দেখা করলেন দলের অন্যতম নেতা চম্পাই সোরেন। মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি জানিয়েছেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার এই প্রবীণ নেতা।  শপথ গ্রহণের দিন ঠিক করার জন্য রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানান তিনি।
সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি না দিলেও জানা গিয়েছে ইডি গ্রেপ্তারই করেছে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে। সূত্রের খবর, আপাতত তাঁকে গৃহবন্দি করা হচ্ছে। ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃবৃন্দ বলেছেন, রাজভবনে গিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন হেমন্ত। দলের সাংসদ মহুয়া মাজি বলেছেন, ‘‘সরকার চালানোর মতো যথেষ্ট বিধায়ক আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। মুখ্যমন্তরীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন হেমন্ত সোরেন। তবে চম্পাই সোরেনও দলের প্রবীণ নেতা। বহু আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘নির্বাচিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রীর ওপর রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখাচ্ছে কেন্দ্রে আসীন বিজেপি।’’  
বুধবার নির্ধারিত সময় বেলা ১টায় রাঁচিতে ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর হেমন্ত সোরেনের বাড়ি পৌঁছান ইডি আধিকারিকরা। জমি কেলেঙ্কারি মামলায় তারা ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার প্রধানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। এর আগে একাধিক বার তার সময় চাওয়া হলেও তিনি তা এড়িয়ে যান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে বুধবার বেলা ১টায় তিনি সময় দিতে পারবেন। সেই মতো তার বাড়ি পৌঁছান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত জেরা চলেছে। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বেরিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা। এর আগে ইডি জানিয়েছিল দিল্লিতে সোরেনের বাসভবনে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তিনি ‘নিখোঁজ’। দিল্লি থেকে সড়কপথে পৌঁছান রাঁচিতে। 

ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতৃত্বাধীন জোটে এ রাজ্যে শরিক কংগ্রেস এবং আরজেডি। ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার নেতারা বলেছেন, ‘‘একনাথ শিন্ডে বা অজিত পাওয়ারের মতো হেমন্ত সোরেন যদি বিজেপি’র দিকে চলে যেতেন তা’হলে ছাড় দেওয়া হতো। তিনি তা করতে রাজি হননি বলেই হেনস্তা চালাচ্ছে কেন্দ্রের ইডি।’’ তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী বা হিমন্তবিশ্ব শর্মারা তদন্তের মুখে পড়ে বিজেপি’তে যোগ দিয়েছেন। তারপরই বন্ধ হয়ে গিয়েছে তদন্ত। বিজেপি বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্নীতি দমনে আগ্রহী নন। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিরোধী শিবির ভাঙতে আগ্রহী।’’

ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার অন্যতম মুখপাত্র তনুজ ক্ষত্রি বলেছেন, ‘‘সহজ কথা হলো হয় বিজেপি করতে হবে, না’হলে জেলে যেতে হবে।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘২০১৯ সালের ভোটে এই সরকার নির্বাচিত হয়েছে। তার আগে রাজ্যে বিজেপি’র সরকার ছিল। তখন জোর করে জমি দখলের মামলা নিয়ে কোনও তদন্ত হয়নি। বরং ইডি রাজ্যে এসেছিল মনরেগার নয়ছয় সংক্রান্ত তদন্তে। সেখানে বিজেপি সরকার জড়িত বলে তদন্ত আটকে গিয়েছে।’’ কংগ্রেস নেতা সুবোধকান্ত সহায় বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো তছনছ করে ফেলছে। তার আরেকটি নজির দেখা যাচ্ছে ঝাড়খণ্ডে।’’

এদিকে হেমন্ত সোরেন দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে বিনা অনুমতিতে প্রবেশের জন্য ইডি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে রাঁচির রতপসিলি জাতি ও আদিবাসী বিষয়ক থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন।   

অপরদিকে জেএমএম সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে ফিরে দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেন হেমন্ত সোরেন। সেখানে চম্পাই সোরেনের নাম সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়। 

Comments :0

Login to leave a comment