তিনি বলেন, ‘‘এই হামলা শুধু একটা বাসভবনের ওপর নয়, শুধু মুজিবর রহমানের স্মৃতির প্রশ্ন জড়িয়ে আছে তা নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের চিহ্ন গুলো আছে তার ওপর আক্রমণ চলছে। যারা বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসকে বিকৃত করতে চায়, শেষ করতে চায় তারাই এই হামলা চালাচ্ছে। ইতিহাসের ওপর এই আক্রমণের চেহারা আমরা এই দেশেও দেখছি। যে কোন প্রগতিশীল ধর্ম নিরপেক্ষ যুক্তিবাদী শক্তিকে ইতিহাসের ওপরে আক্রমণের প্রতিবাদ জানাতে হবে। আমরা সিপিআই(এম) গোড়া থেকে এই ধরনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছি। তবে সেই সঙ্গে মনে রাখা ভালো এই ধরনের উগ্র-দক্ষিণপন্থী আক্রমণে ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না।’’
সেলিম বলেন, দক্ষিণপন্থা অভ্যুত্থান করলে কি হয় তা আমরা বাংলাদেশে দেখতে পাচ্ছি। উগ্র-দক্ষিণপন্থা ইতিহাসকে বিকৃত করতে চায়। আমাদের লড়াই মেহনতি মানুষের প্রগতিশীল যুক্তিবাদী সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইয়ের ইতিহাসকে রক্ষা করা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ওখানে দেখছি ৫ আগস্টকে স্বাধীনতা দিবস বলা হচ্ছে যেদিন হাসিনা দেশ ছাড়েন। আর আমাদের এখানে রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিনকে স্বাধীনতা দিবস বলা হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। বাংলাদেশের ঘটনা দেশি বিদেশি প্রতিক্রিয়াশীল শক্তিকে মদত জোগাচ্ছে। আমাদের এখানে যেমন সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী লড়াইকে অস্বীকার করার চেষ্টায় সাম্রাজ্যবাদ উৎসাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে যখন মুজিবের বাড়ির ওপর হামলা চলছে তখন নীরব থেকেছে প্রশাসন সেই বিষয় জানতে চাওয়া হলে সেলিম বলেন, আদৌ কোন সরকার আছে বাংলদেশে? সংবিধান সম্মত কোন সরকার চলছে ওখানে?
এরাজ্যে প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানেও যারা নৈরাজ্যের শক্তি বিভাজনের শক্তি, তারা উৎসাহিত হচ্ছে বাংলাদেশকে দেখে। ওখানে ভারত বিদ্বেষের নাম করে আসলে সংখ্যালঘু বিদ্বেষ, প্রগতি বিরোধী এবং ঘৃণার প্রচার চলছে। ওখানে জামাত এই কাজ করছে এখানে আরএসএস, বিজেপি এই একই কাজ করছে। যুক্তিবাদী প্রগতিশীলদের প্রতিবাদে নামতেই হবে। তিনি বলেন যে ধর্মের মোড়কে রাজনীতি করা যাবে না। মানুষের জীবন জীবিকা, কাজ বা ফসলের দামের মতো দাবি নিয়েই লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, এখানে দেখেছেন গেদে লোকালে দাড়ি এবং টুপি আছে, মুসলিম বলে এক যাত্রীকে হেনস্তা করা হয়েছে। আবার সহযাত্রীদের আরেক অংশ তাঁকে রক্ষা করেছেন। তাঁর বাড়িতে আজ সকালে হরিপালে গিয়েছেন সিপিআই(এম) কর্মীরা। তাঁরা পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। আক্রান্তরাই আক্রান্তের পাশে থাকে।
তিনি মনে করিয়েছেন রাজ্যের তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে আরএসএস ঘৃণার রাজনীতি শুরু করেছে। আগে রাজ্যে এই রাজনীতি জমি পায়নি। এক প্রশ্নে তিনি বলেন যে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত মনে করছেন রাজ্যে কাদা তৈরি হয়েছে। এবার পদ্ম ফুটবেে। তবে সে গুড়ে বালি। এরাজ্যের মানুষ এই রাজনীতিকে পরাস্ত করবেন।
Comments :0