সন্দেশখালিকান্ডে জামিন হলোনা সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারের। সোমবার পুলিশের আবেদনে তিন দিন নিরাপদ সর্দারকে হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বসিরহাট আদালত। তিনদিন পুলিশ হেপাজতে থাকবেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক এবং সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য নিরাপদ সর্দার। রবিবারের পর সোমবারও তাঁর গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে।
পুরো পরিস্থিতিতে সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, দুষ্কৃতীদের সরকার চলছে রাজ্যে। দুষ্কৃতীদের আড়াল করছে পুলিশই। সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে আড়াল করা হচ্ছে অপরাধীদের।
এদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, সন্দেশখালিতে সব অপরাধীদের ধরা হয়েছে।
অপরদিকে সোমবার পুলিশের করা সুয়োমোটো মামলায় জামিন হয় সন্দেশখালির অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা উত্তম সর্দার এবং বিজেপি নেতা বিকাশ সিংহের। কিন্তু জামিনের পরেই ফের তাদের অন্য একটি মামলায় হেফাজতে নেয় পুলিশ। আদালত চত্ত্বর থেকে বিকাশ সিংহকে গ্রেপ্তার করা হয়। উত্তম সর্দারকে তার আইনজীবীর সেরেস্তা থেকে হেপাজতে নেয় পুলিশ। বিকাশ সিংহের গ্রেপ্তারি ঘিরে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয় বসিরহাট আদালত চত্ত্বরে।
সুজন চক্রবর্তী বলেন, শেখ শাহজাহানের মতো দুষ্কৃতী ৫ জানুয়ারির পর থেকে লুকিয়ে রয়েছে। এলাকাতেই রয়েছে শাহজাহান। পুলিশের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে রয়েছে।
নিরাপদ সর্দারকে রবিবার গ্রেপ্তার করা হয় তৃণমূল নেতা শিবু হাজরার অভিযোগের ভিত্তিতে। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, যে শিবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন এলাকার মহিলারা, তাকে গ্রেপ্তার করল না পুলিশ। অথচ তার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হলো আন্দোলনের মুখ নিরাপদ সর্দারকে।
অপরদিকে সোমবার নদীয়ার করিমপুরের এক সভা থেকে সন্দেশখালি কান্ড নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘রাজ্যের দিদির লুট আর দেশে মোদীর লুট চলছে। লুটের বিরুদ্ধে লড়তে হলে তৃণমূল এবং বিজেপি কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না। লুটেরাদের ধর্ম দেখলে রক্ষা পাওয়া যায় না, তেমনই লুটের বিরুদ্ধে যদি লড়তে হয় তাহলেও ধর্ম না দেখে সবাইকে এককাট্টা হতে হয়। এলাকায় এলাকায় জল জমি জঙ্গল সব লুট হয়ে যাচ্ছে, গরিবের প্রকল্পের টাকা থেকে চাকরি লুট হয়ে যাচ্ছে। আর যারা ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি করে, তারা মানুষকে ধর্মের নামে আলাদা আলাদা করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধেই বামপন্থীদের লড়াই। তৃণমূল আর বিজেপি পরস্পরের বিরুদ্ধে আদৌ লড়ছে না। ওদের মধ্যে বোঝাপড়া এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে। রাজ্যকে বাঁচাতে হলে মানুষকে এককাট্টা হয়ে সব চোর, দুর্নীতিগ্রস্ত, দুষ্কৃতীদের একযোগে তাড়াতে হবে। আগামী প্রজন্মের স্বার্থে এটাই সময়ের দাবি।’’
Comments :0