Qatar India

এগিয়ে গিয়েও স্বপ্নভঙ্গ ভারতের

খেলা

 

কাতার—  ২ (ইউসুফ, আহমেদ)

ভারত- ১ (ছাংতে) 

 স্বপ্নভঙ্গ! লড়েও হার। রেফারির কার্যত বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কাছে হার মানতে হলো ভারতের। প্রথম গোলটা হজম করার আগে অবধি জানপ্রাণ দিয়ে লড়াই করছিল ইগরের দল। কিন্তু ওই গোলটাই দলের মনোবল সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেয়। 

দ্বিতীয় রাউন্ডের গ্রুপ ‘এ’র শেষ ম্যাচে দোহায় এগিয়ে গিয়েও ২-১ গোলে হারল ভারত। প্রথমার্ধে ছাংতের গোলে এগিয়ে যায় ভারত। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ কোয়ার্টারের প্রথম দশ মিনিটে দু’টি গোল করে ভারতের স্বপ্ন ভেঙে দেয় কাতার। তবে ভারত যদি ম্যাচটা শেষ অবধি ড্র রাখতো, তবুও তৃতীয় রাউন্ডে উঠতে পারতো না। কারণ আফগানিস্তানকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়ে পরের পর্বে চলে গেল কুয়েত। কিন্তু তাঁদেরই তৃতীয় রাউন্ডের সুযোগ কম ছিল। ভারতের কাছে সবচেয়ে বেশি ছিল। কিন্তু শেষ চারটি ম্যাচে ভারত একটিতেও জিততে না পারায় এই দশা হলো তাঁদের। ইগর স্টিম্যাচ বলেছিলেন, দেশকে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে দেবেন, কিন্তু পারলেন কই? তাঁর প্রশিক্ষণে শেষ আটটি আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয়হীন রইল ভারত। 

এদিন ছক বদলে একাদশ সাজান ইগর। দলে বেশ কয়েকটা পরিবর্তন করেছেন তিনি। একাদশে ফিরলেন মনবীর সিং, রহিম আলি, ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ, মেহতাব সিং। তবে শুরু থেকেই দাপট কাতারের। তাঁদের আক্রমণ সামলাতে হিমশিম খেল ভারতের  রক্ষণ। ১২ মিনিটের মধ্যে দু’বার গোল হজম করতে করতে বেঁচে গেল ইগরের দল। ম্যাচের তিন মিনিটে, গুরপ্রীতের সৌজন্যে বেঁচে যায় ভারত। ১২ মিনিটে আলরায়ির শট নিজের শরীর ছুঁড়ে দিয়ে বাঁচান ভারতীয় ডিফেন্ডার মেহতাব সিং।  গোললাইন সেভ করে দলের পতন রোধ করেন মেহতাব। 

১৮ মিনিটে ফের গুরপ্রীতের সৌজন্যে বেঁচে যায় ইগরের দল। ধীরে ধীরে খেলায় ফেরে ভারত। ২০ মিনিটের পর প্রেস করা শুরু,  তাতেই ভুল করে বসে কাতার। অফসাইডের ফাঁদে পড়ায় সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি সুরেশ সিং। দু’মিনিট বাদে ছাংতেকে ফাউল করেন কাতারের এক ফুটবলার। ফ্রিকিক পায় ভারত। ফ্রিকিকটি গোলে পরিণত করতে পারেননি ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ। ৩২ মিনিটে মনবীর-ছাংতে যুগলবন্দি গোল করতে ব্যর্থ হলেও, পাঁচ মিনিট পর ব্রেন্ডন ফার্নান্ডেজ পাস বাড়ান বক্সে, কাতারের এক ফুটবলারের পায়ে লাগে। কিন্তু বলটা ফলো করে শরীর ছুঁড়ে দিয়ে গোল করেন ছাংতে। বিপক্ষের ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বুদ্ধিমত্তার  পরিচয় দিলেন তিনি। কাতারের বিরুদ্ধে গোলটি করে, ছাংতে বুঝিয়ে দিলেন কেন তাঁকে সুনীল ছেত্রীর উত্তরসূরি বলা হচ্ছে! তাঁর গোলের পর গ্যালারিতে উৎসবের পরিবেশ তৈরি করেন ভারতীয় সমর্থকরা সবমিলিয়ে প্রথমার্ধ ইতিবাচক ভাবেই শেষ করে ভারত।  প্রথম ৪৫ মিনিটে সমানে সমানেই লড়াই করেছে ভারত। সুযোগ তৈরিতে পিছিয়ে থাকলেও, বল দখল নেওয়া এবং কাতারের থেকে নিজেদের মধ্যে বেশি পাস খেলেছে ভারত। 

বিরতির পর, কাতার কোচ দ্রুত তিনটি পরিবর্তন করেন। চাপে পড়ে বল দখল হারায় ভারত। তাতে হালকা বিপদের পরিস্থিতি তৈরি হলেও সামলে নেয় তাঁরা। ৫২ মিনিটে কাতারের এক ফুটবলারের থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে, জয় গুপ্তাকে পাস দেন ছাংতেকে। তাঁর ফাইনাল পাসটা সঠিক হলে, ব্যবধান বাড়াতে পারত ভারত। ছাংতের থেকে বল রহিম আলি অবধি পৌঁছায়নি, তার আগেই বল দখলে নিয়ে কাতার। ৫৫ মিনিটে ম্যাচে প্রায় সমতা ফিরিয়ে এনেছিল কাতার। কিন্তু পারেননি মেহতাব সিংয়ের সৌজন্যে। ফের একবার তিনি ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন, গোললাইন সেভ করে দলকে বাঁচিয়ে দেন তিনি।  ৬২ মিনিটে দু’টি পরিবর্তন করেন স্টিম্যাচ। রহিম ও ব্রেন্ডনকে তুলে নামান কোলাসো ও সাহালকে। তাঁরা নামার পরই একটি আক্রমন রচনা করেন। শেষ অবধি লিস্টন অফসাইডের কবলে না পড়লে, ২-০ করে ফেলত ভারত! লিড ধরে রাখতে পারলো না ভারত। ৭৩ মিনিটে কাতারের হয়ে সমতা ফেরান ডিফেন্ডার ইউসুফ আইমেন। বিতর্কিত গোলে সমতা ফেরায় কাতার। রেফারির কাছে গিয়ে প্রতিবাদ করেন ভারতীয় ফুটবলাররা। ম্যাচ রেফারি, তাঁর সহকারীর সঙ্গে আলোচনা করে, কাতারের পক্ষে গোল দিয়ে দেন। ভিএআর যদি থাকতো, হয়তো গোল হজম করতে হত না ভারতকে।  ৮৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কাতার। এবার গোলটি করেন আহমেদ আল-রাওই, বাঁক খাওয়ানো শটে গুরপ্রীতকে পরাস্ত করেন তিনি। ৯৪ মিনিটে বক্সের মধ্যে সাহালকে ফাউল করলেও রেফারির পেনাল্টি দেয়নি। শেষ বাঁশি বাজার পর তৃতীয় রাউন্ডে ওঠার সমস্ত আশা শেষ হয়ে যায় ভারতের। 

Comments :0

Login to leave a comment