মধুসূদন চ্যাটার্জি
ইলেকটোরাল বন্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা লুট করা একটি লুটেরা বাহিনী তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি, দুই শাসকদলই। মানুষ যাতে এই লুটেরাবাহিনীর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে না পারে তার জন্য মানুষের মধ্যে ধর্ম, জাতপাত দেখিয়ে বিভেদ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই লুটেরাদের বিরুদ্ধে এক হতে হবে মানুষকে। যেমন আরজি করের নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে সমস্ত মানুষ এক হয়েছিলেন এখন এই উপনির্বাচনের সময়ও দুই শাসকদলের বিরুদ্ধে আমজনতাকে এক হতেই হবে। মানুষকে বার্তা দিতে হবে এই অন্যায় অবিচার মানতে রাজি নয়।
শুক্রবার তালডাংরা বিধানসভা এলাকার সিমলাপাল ও তালডাংরার বিবরদায় দুটি নির্বাচনী সমাবেশে এই আহ্বান রাখেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন সিমলাপালের সভাকে বানচাল করতে তৃণমূলবাহিনী নতুন কৌশল অবলম্বন করেছিল। এদিনই তৃণমূলের সভা ছিল সিমলাপাল হাইস্কুলের সামনে। এই সভার আগে সিমলাপাল ব্লকের সমস্ত গ্রামে দুটো, তিনটে করে বাস পাঠিয়ে দেয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। যাতে সেই বাসে তৃণমূলের সভায় মানুষ আসে। মানুষ সেই ফাঁদে পা দেননি। বহুমানুষ নিজেরা বাসে করে, বা অন্য কোনও ভাবে সভায় সিমলাপাল নদী ঘাটে উপস্থিত হন। আইএসএফের কর্মীরাও এই সভায় যোগদান করে।
এদিনের সভায় সেলিম বলেন, এসএসসি, প্রাইমারিতে যে ব্যাপক দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে তেমনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডেও নিয়োগে দুর্নীতির ঘটনা সামনে এসেছে। রাজ্যে এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে দুর্নীতি নেই। নানা কৌশলে এই দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, এখনও চলছে। তিনি জানান, "২০১১সালের পর থেকে আসানসোল, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ, হাজিনগর বসিরহাট সহ বিভিন্ন জায়গায় যে দাঙ্গা হয়েছে তার একটারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? শাসকদলের এই ভূমিকায় দাঙ্গাবাজরা মদত পেয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, "মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে শাসক ভয় পায়"। উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, "দিল্লিতে ৩০০ কৃষক সংগঠন এক হয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষিনীতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক লড়াই করে সরকারকে মাথানত করে বাধ্য করেছিল। আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াকে অত্যাচার করে নৃশংস খুনের ঘটনায় সারা রাজ্যের মানুষ এক হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। ধামাচাপা দিতে পারেনি শাসকদল। ওরা ঐক্যকে ভয় পায়। সেই ঐক্যকে আরও মজবুত করতে হবে।’’
সেলিম বলেন, "বেকারদের কাজ কোথায়? রাজ্যে নানাস্তরের যে আমলারা অবসর নিচ্ছেন তাদের অবসরের পর ফের কাজে যুক্ত করা হচ্ছে। তাহলে বেকার শিক্ষিত যুবক যুবতীরা কোথায় যাবে? কাজের দাবীতে সরকারের নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতেই হবে"।
এদিনের দুটি সভাতে সিপিআই(এম) নেতা অমিয় পাত্র বলেন, "এই উপনির্বাচনের ভিতর দিয়ে শাসকদলকে জানাতে হবে তাঁদের নীতি মানুষ মানছেন না। তিনি বলেন, "হাইকোর্ট বলেছে ২মাসের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে শূন্যস্থান পূরণ করে নিয়োগ করতে হবে। সরকার মানছে না। এই বিধানসভা এলাকার একাধিক স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। এই নির্বাচনে মানুষ তার জবাব দেবেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টি নেত্রী দেবলীনা হেমব্রম, জেলা সম্পাদক অজিত পতি, আইএসএফ নেতা জুলকার খাঁ, তালডাংরা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবকান্তি মহান্তি। সিমলাপালে সভা পরিচালনা করেন বিপ্লব দাশমহন্ত ও বিবরদায় হারাধন ঘোষ।
Election meeting selim taldangra
মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে শাসক ভয় পায়, তালডাংরায় সেলিম
×
Comments :0