অন্যকথা
ঘড়ির পেন্ডুলামের সূত্র
তপন কুমার বৈরাগ্য
মুক্তধারা
ছেলেটার বয়েস মাত্র সতেরো বছর। সালটা ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দ।
একদিন ফ্রান্সের এক গির্জায় তিনি এসেছেন।
চার্চটা আলোক সজ্জায় সজ্জিত। প্রভু যীশুকে তিনি নিজের শ্রদ্ধা ও ভক্তি জানাতে এসেছেন।
চার্চের মধ্যে ঢুকলেন অনুসন্ধিৎসু ছেলেটা।তিনি একটা বেদির কাছে এসে
থমকে দাঁড়ালেন।বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গেলেন।
বেদির কাছে শিকল দিয়ে ঝুলানো আছে একটা তেলের
প্রদীপ।তিনি বেশ কিছুক্ষণ সেই দিকে তাঁকিয়ে ছিলেন।
চমকে উঠলেন একটা ঘটনা লক্ষ্য করে। তিনি লক্ষ্য করলেন
শিকলের দোলার সাথে সাথে বাতিটাও দুলছে। এই দোলুনির
মধ্য আছে এক নির্দিষ্ট ছন্দ।কি সে ছন্দ? তিনি দেখলেন
ছন্দটা দোলনের বিস্তার।প্রদীপের প্রতিটা দোলনের বিস্তার
আগের চেয়ে ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে।কিন্তু সময়টা সেই একই
থাকছে।দোলনের বিস্তার কমছে অথচ সময় সেই একই
লাগছে।এই ঘটনা তাঁর অনুসন্ধিৎসু মনে এক গভীর দাগ
কাটল। তিনি ভাবতে লাগলেন কেন এমনটা হচ্ছে?
অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে চলে এলেন নিজের গবেষণাগারে।
গবেষণাগারে ভারী বস্তুকে হালকা সুতো দিয়ে ঝুলিয়ে
পেন্ডুলাম বা দোলক তৈরি করলেন।
তিনি নিজের প্রশ্নের জবাব নিজেই বের করে ফেললেন।
এই ছেলেটার নাম গ্যালিলিও গ্যালিলি। যিনি ১৫ই ফেব্রয়ারী
১৫৬৪খ্রিস্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন। মারা যান ৮ই জানুয়ারী
১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে। যিনি ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানী,জ্যোতিবিজ্ঞানী,
গণিতজ্ঞ ও দার্শনিক।যার শ্রেষ্ঠকীর্তি ১৬০৯খ্রিস্টাব্দে দূরবীণ
আবিষ্কার।
যিনি জীবনের শেষ চারটে বছর অন্ধত্ব নিয়ে বেঁচে ছিলেন।
তারপর ১৬৪২খ্রিস্টাব্দে আটাত্তর বছর বয়েসে তিনি চিরনিদ্রায়
ঢলে পড়েন।
Comments :0