অরূপ সেন: নয়াদিল্লি
মুখ্যসচিবের দেখা করতে আসার কথা ছিল। শান্তিপূর্ণ ধরনা অবস্থানে অপেক্ষায় ছিলেন কৃষকরা। কিন্তু দিল্লি লাগোয়া গ্রেটার নয়ডায়। কিন্তু উত্তর প্রদেশ পুলিশ সেখান থেকেই শতাধিক কৃষককে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন মহিলারাও। জমায়েত ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার করা হয়েছে গৌতম বুদ্ধ নগরে সারা ভারত কৃষক সভার সভাপতি রূপেশ ভার্মাকেও। শান্তিপূর্ণ অবস্থান থেকে কৃষকদের গ্রেপ্তারের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সারা ভারত কৃষক সভা। সংগঠনের সভাপতি অশোক ধাওলে এবং সাধারণ সম্পাদক বিজু কৃষ্ণন বলেছেন, কৃষকদের গ্রেপ্তার করে জমির ক্ষতিপূরণের দাবিতে এই আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না।
কৃষকসভার মতো কয়েকশো সংগঠনের মঞ্চ সংযুক্ত কিসান মোর্চা বিবৃতিতে বলেছে, নয়ডা-দললি হাইওয়ের পাশে যেভাবে শান্তিপূর্ণ অবস্থান থেকে কৃষকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার নিন্দার ভাষা নেই। সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।
নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা বা যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে, দিল্লি লাগোয়া পশ্চিম উত্তর প্রদেশের এই সব এলাকাতেই গড়া হয়েছে নতুন বসতি, ঝকঝকে বাণিজ্য কেন্দ্র। গড়া হয়েছে শিল্পাঞ্চল। কিন্তু জমি থেকে উচ্ছেদ হতে হয়েছে কৃষকদের। সমস্যা হলো, রাজ্যেৃর বিভিন্ন সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও সঙ্গত ক্ষতিপূরণ দেয়নি।
কৃষকরা মঙ্গলবারও দাবি তুলেছেন যে শিল্পকেন্দ্র হিসেবে উন্নয়নের পর জমির ১০ শতাংশ তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক। ২০১৩-তে দেশের সংসদে পাশ হয়েছে জমি অধিগ্রহণ এবং পুনর্বাসন আইন। সেই আইনে অধিগ্রহণের সময় জমির দামের চারগুন হিসেবে এনে ক্ষতিপূরণের হার ঠিক করতে বলা হয়েছে। কেননা চাষের জমিতে শিল্পাঞ্চল হওয়ার পর দাম বহুগুন বেড়ে যায়। কিন্তু কৃষকদের কিছুই দেওয়া হয়নি।
সোমবারই দিল্লিতে সংসদে গিয়ে বিশদে এই দাবি তুলতে এককাট্ট হন কৃষকরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙেও ফেলেন। বিজেপি সরকারের পুলিশ ব্যারিকেড, কনটেনার, কাঁটাতার বসিয়ে কৃষকদের আটকাতে পুরো এলাকাকে যুদ্ধক্ষেত্র বানিয়ে তোলে। কিন্তু রুষে ওঠা কৃষকদের দমানো যায়নি। শেষ পর্যন্ত সরকার আশ্বাস দেয় যে মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং শীর্ষ স্তরের অন্য আধিকারিকরা বিশদে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার জন্য বসবেন।
মঙ্গলবার সকালে অপেক্ষায় থাকা কৃষকরা রাস্তা ছেড়ে দিয়ে অবস্থান চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু তার মধ্যেই তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্তত একশোজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Comments :0