দিল্লির সরকার এবং এই রাজ্যের তৃণমূল সরকার দুই সরকারই মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হচ্ছে। সরকারি মদতে ব্যাপক দুর্নীতি, বেলাগাম লুট। নারীর সম্ভ্রম নিলামে উঠেছে। জাতের নামে, সম্প্রদায়ের নামে মানুষে মানুষে বিভাজন। চৌতরফা আক্রমণ। দরজা জানালা বন্ধ করে থাকার সময় এখন নয়। দেশ রক্ষার জন্য, বহুত্ববাদী ভারতের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য, তৃণমূল বিজেপি’র সেটিংয়ের বিরুদ্ধে সবাই মিলে একসাথে রাস্তার দখল নিতে হবে। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরে উপচে পড়া সমাবেশে একথা বলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। পার্টির দুর্গাপুর পূর্ব-৩ নম্বর এরিয়া কমিটির সম্মেলন উপলক্ষে প্রাকাশ্য সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল সংলগ্ন ময়দানে। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিপিআই(এম) নেতা পার্থ দাস। সভাপতিত্ব করেন রাকেশ শর্মা।
মীনাক্ষী বলেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করে রাখাটা ওদের কাজ। তৃণমূল এবং বিজেপিকে যারা নির্বাচিত করেছেন, ক্ষমতায় এসে তাদেরই সর্বনাশ করছে এই দুই দল। রাজ্যে শিল্প উঠে যাচ্ছে। ২ হাজার ২২৭টা কারখানা রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে চায়। কারখানাগুলো ভাঙা চোরা টিন কা ডাব্বা হয়ে যাচ্ছে। নদী, নদীর বালি গিলে খাচ্ছে। জমির চরিত্র বদলে যাচ্ছে। ভাগ বাঁটোয়ারার সিস্টেমের সরকার। রাজ্যে এমন কোনো বিভাগ নেই, যেখানে দুর্নীতি নেই। নির্বাচনের আগে বিজেপি বলেছিল, ‘দেশ কো বেচনে নেহি দেংগে’। এখন দেশ বেচার সরকার। বেসরকারি মালিকদের হাতে সরকারি সম্পত্তি তুলে দেওয়া হচ্ছে। মালিকদের সুবিধার জন্য শ্রম আইন তুলে দিয়ে শ্রম কোড আনা হয়েছে।
সমাবেশে উপস্থিতির একাংশ।
আর জি করের নৃশংস ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন মহিলা ডাক্তার তার কাজের জায়গাতেই বর্বরতার শিকার হলেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী তাঁর শরীরে ২৪ জায়গায় আঘাত লেগেছিল। গোছাগোছা চুল সেমিনার হলে পড়ে ছিল। পেলভিসের হাড় ভেঙে দিয়েছে। গলার হাড় ভেঙে দিয়েছে। অত্যাচার কতোটা হলে চোখের মণি ফেটে রক্ত বের হয়? সেই মেয়েটির বাবা ও মা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন। অমিত শাহ এই রাজ্যে মিটিং করে গেলেও তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন নি। তৃণমূল ও বিজেপি’র সেটিং ধরা পড়ে গেছে এই ঘটনা ঘটার ৩/৪ দিনের মধ্যে আরএসএস’র মোহন ভাগবত এই রাজ্যে এসে বলে গেছেন, মমতা যা যা পদক্ষেপ করবে, আমি সমর্থন করবো। সিবিআই নির্ধারিত সময়ে চার্জশিট জমা করলো না। সিবিআই’র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, সারদা, নারদা, বগটুই হয়ে আর জি কর পর্যন্ত সব মামলায় মাঝপথে এসে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন অভিযুক্তরা সবাই জামিন পাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গুন্ডা দিয়ে গায়ের জোরে ভোট লুট করে দুর্গাপুর পৌর কর্পোরেশন দখল করা হয়েছে। মহিলা সমবায় ব্যঙ্কের নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করতে দেওয়া হয়নি। গ্রামে গ্রামে গায়ের জোরে পঞ্চায়েতগুলি দখল করা হয়েছে। ওরা ভেবেছে মানুষ ওদের দুর্নীতি, গাজোয়ারির সঙ্গে আপোস করবেন। ভয় দেখিয়ে বরাবর মানুষকে দমিয়ে রাখা যায়না। দুর্গাপুরকে বাঁচানোর সংগ্রাম দেশ বাঁচানোর সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। গরিবের পায়ের তলার জমি শক্ত করে তুলতে হবে। লালঝান্ডা মানে শান্তি শৃঙ্খলা। মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা।
Comments :0