দোকান ব্যবসায়ীদের নাম জানানোর নির্দেশে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ালো সুপ্রিম কোর্ট। ৫ আগস্ট পর্যন্ত মেয়াদ থাকবে নিষেধাজ্ঞার। শুক্রবারই শেষ হয় আগের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ। এদিন তার মেয়াদ বাড়িয়েছে বিচারপতি হৃষিকেশ রায় ও এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চ।
কাঁওয়ার যাত্রীরা বছর বছর ধরে যে রাস্তায় যান সেখানেই দোকান ব্যবসায়ীদের জন্য নির্দেশিকা জারি করে উত্তরাখণ্ড ও উত্তর প্রদেশ সরকার। দুই রাজ্যেরই বিজেপি সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয় দোকান ব্যবসায়ীদের নাম, এমনকি কর্মচারীদের নাম জানাতে হবে ক্রেতা কাঁওয়ারিদের।
শ্রাবণে জল বাঁকে করে নিয়ে এই দর্শনার্থীরা বরাবর ধর্মীয় রীতি পালন করে চলেছেন। ব্যবসায়ী এবং দর্শনার্থীদের মধ্যে বিশ্বাস বজায় থেকেছে সর্বদা। বিভিন্ন অংশই সরবে বলে যে মুসলিম দোকান ব্যবসায়ী এবং দোকানে মুসলিম কর্মী থাকলে তাঁদের চিহ্নিত করতে এই নির্দেশিকা দুই রাজ্যের বিজেপি সরকারের। আগের দফায় নির্দেশিকাকে আটকে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে দর্মনিরপেক্ষ সাংবিধানিক ব্যবস্থার পক্ষে এমন সিদ্ধান্ত বিপজ্জনক।
উত্তর প্রদেশ সরকারের পক্ষে আইনজীবী মুকুল রোহাতগি সওয়াল করেন। তিনি বলেন, কেন্রী েয় খাদ্য ও সুরক্ষা বিধি অনুযায়ী খাদ্য সরবরাহকারী প্রত্যেককে নাম এবং ব্যবসায়ীর নাম জানাতে হয়।
পালটা দুই বিচারপতি বলেন, কেন্রীইেয় আইনে এমন বিধি থাকলে তো সব রাজ্যকে সর্বত্র তা প্রয়োগ করতে হয়। এমনকি উত্তর প্রদেশ সরকারকেও অন্য সব ব্যবসায়ীদের কাছে এই বিধির উল্লেখ করে নির্দেশিকা পাঠাতে হয়। তা তো করা হয়নি। বেছে বেছে একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট যাত্রার পথে দোকানদারদের জন্য তা পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশিকার বিরুদ্ধে আবেদনকারীদের সওয়ালে বলা হয়, গত ৬০ বছরে অন্তত কাঁওয়ার যাত্রীদের জন্য এমন কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি। তাতে এই রীতি পালনের অনুষ্ঠান ব্যাহত হয়নি। উত্তর প্রদেশ সরকারের হলফনামাতেও স্বীকার করা হয়েছে যে নির্দেশিকা ঘিরে বৈষম্য হয়েছে।
নির্দেশিকায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন অংশ মনে করিয়েছে যে নাজি জার্মানিতে ইহুদিদের চিহ্নিত করতে এমন নির্দেশিকা জারি করা হত। ইহুদিদের জীবিকা ধ্বংস করার জন্য হিটলারের নির্দেশে এই আক্রমণ চলত। আদালতও বলেছে, কেউ স্বেচ্ছায় নাম জানাতে থাকলে আপত্তির কিছু নেই। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে এমন নির্দেশিকা পালন করতে পুলিশকে নামিয়ে বাধ্য করা যাবে না। ক্রেতার জানা প্রয়োজন তিনি ঠিক যে খাবার চাইছেন তা পাচ্ছেন কিনা।
উল্লেখ্য, নির্দেশিকা জারি হোয়ার কিছু আগে থেকেই দু’রাজ্যে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন সংগঠন দোকানদারদের হুমিক দিতে থাকে। এই রাজনীতি কয়েক বছর ধরেই চালাচ্ছে এই ধরনের সংগঠন। আগেই নির্দেশিকার প্রতিবাদ জানিয়েছে সিপিআই(এম)।
Comments :0