প্রবন্ধ
জাপানী মাকড়সা কাঁকড়া
তপন কুমার বৈরাগ্য
মুক্তধারা
এই কাঁকড়ার মতন দীর্ঘ পা আর কোনো কাঁকড়ার পৃথিবীতে
নেই।এই কাঁকড়ার দশটা পা রয়েছে। শুনলে আশ্চর্য
হতে হয় এর এক একটা পা প্রায় চার ফুট লম্বা হয়।
আটটা পা এরা চলাচলের জন্য ব্যবহার করে।যে দুটো
পায়ে নখ আছে সেই পা দুটো চলাচলের জন্য ব্যবহার করে না।
এই পা দুটোতে ধারালো নখ থাকে।এই ধারালো নখ দিয়ে
তারা শিকার ধরে।এই পা দুটোকে চেলিপেড বলে।এই
চেলিপেডগুলো ওই আটটা পায়ের চেয়েও বড় হয়।
পুরুষের চেলিপেড বেশি লম্বা হয়।সেই তুলনায় স্ত্রী জাপানী
মাকড়সার চেলিপেড কম লম্বা হয়।এরা ডাঙায় উঠে এসে
সমুদ্রের বালি কাদার উপর দিয়ে সহজেই হেঁটে যেতে পারে।
এরা আক্রান্ত হলেই ধারালো নখ দিয়ে আক্রমনকারীকে
আক্রমন করে। ধারালো নখ দিয়ে এরা বেশ কিছুটা
মাংস পর্যন্ত খাবলে নিতে পারে। তবে এরা শিকারীদের
দ্বারা আক্রান্ত হয় খুবই কম।কারণ এরা সমুদ্রের ছয়শো ফুট
থেকে আঠারোশো ফুট গভীরে বাস করে। এরা জাপানের
প্রশান্তমহাসাগরে উপকূলে বাস করে।যার জন্য এদের
বলা হয় জাপানী মাকড়সা কাঁকড়া।এদের দেহ বারো
ইঞ্চির মতন লম্বা হয়। আরো আশ্চর্য হতে হয় এরা প্রায়
একশো বছর বাঁচে।এরা বেশির ভাগ মৃত ক্ষয়প্রাপ্ত মাছ,অমেরুদন্ডী
প্রাণী,শেওলা ভক্ষণ করে। একটা মাকড়সার মতন এদের
দেহাকৃতি বলে এদের মাকড়সা কাঁকড়া বলা হয়।
এরা মেরুদন্ডী প্রাণী।একটা জাপানী মাকড়সা কাঁকড়া
একসঙ্গে প্রায় দেড়লক্ষের মতন ডিম পাড়ে ;কিন্তু তা থেকে
মাত্র আটদশটা শাবক জন্ম নেয়।বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর
বাচ্চারা বেশ কিছুদিন সমুদ্রের উপরের উষ্ণ জলে থাকে।
মায়েরা গভীর জলে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এদের পা ক্ষয়প্রাপ্ত
হলে বেশ কিছুদিন পর তারা আগের মতন পা ফিরে পায়।
জাপান ছাড়া অন্য কোন দেশে এই ধরনের কাঁকড়া দেখা
যায় না।
বর্তমানে সমুদ্রের জল দূষণের জন্য এদের সংখ্যা হ্রাস
পাচ্ছে।
Comments :0